দেশে ৬ জনের দেহে করোনার ইউকে ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত

দেশে ৬ জনের দেহে করোনার ইউকে ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরণটি বাংলাদেশে পাওয়া গেছে জানুয়ারি মাসেই । কিন্তু তথ্যটি জানা যাচ্ছে এখন।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বিবিসিকে বলেছেন, জানুয়ারির শুরুতেই যুক্তরাজ্য ফেরত যাত্রীদের মধ্য থেকে প্রথম এই ধরণ শনাক্ত হয়।

প্রথম যে যাত্রীর শরীরে এই নতুন ধরণ শনাক্ত হয়, তিনি যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

সেখানে তার শরীর থেকে সংগ্রহকৃত নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে আইইডিসিআর করোনাভাইরাসের যুক্তরাজ্যের নতুন ধরণ শনাক্ত করে।

জানুয়ারির শুরুতে ভাইরাসের যুক্তরাজ্যের নতুন ধরণ শনাক্ত হলেও, সেটি আগে কেন জানানো হয়নি, সে প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।

অধ্যাপক শিরিন বলেছেন, জানুয়ারির শুরুতে ঢাকায় প্রথম শরীরে করোনাভাইরাসের নতুন ধরণবাহী একজন শনাক্ত হন।

এরপর সিলেটে ওসমানী বিমানবন্দরে নামা যাত্রীদের মধ্য থেকেও ভাইরাসের নতুন ধরণবাহী ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন।

এ পর্যন্ত মোট ছয়জনের দেহে করোনার ইউকে ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছেন।

অধ্যাপক শিরিন বলেছেন, কম্যুনিটি ট্রান্সমিশন ঠেকাতে শনাক্ত ব্যক্তিদের কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করা হয়েছে এবং এখনো তারা আইইডিসিআরের নজরদারির মধ্যে রয়েছেন।

আক্রান্ত ব্যক্তিদের শারীরিক অবস্থারও নিয়মিত খোঁজ রাখছে আইইডিসিআর।

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সময় থেকেই দেশটি থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের ব্যাপারে নানা সতর্কতা নেয়া হয়।

ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকেই যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

তবে সতর্কতার অংশ হিসেবে অনেক দেশ যুক্তরাজ্যের সাথে বিমান চলাচল বন্ধ করলেও, বাংলাদেশ তা করেনি।

এদিকে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের নতুন আরো একটি ধরণ শনাক্ত হয়।

বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ ১৭টি নতুন জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করে পাঁচটিতেই করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন পায়।

সংস্থাটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম খান সেসময় বিবিসিকে বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া নতুন স্ট্রেইনের যে বৈশিষ্ট্য, তার সাথে বাংলাদেশে পাওয়া ভাইরাসের পুরোপুরি মিল না থাকলেও অনেকটা মিল রয়েছে।

এ নিয়ে বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন যে ধরণ পাওয়া গেছে, সেটি আগের স্ট্রেইনের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি গতিতে ছড়ায় বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলবার দেশে নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল নয় শতাধিক।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৯ মার্চের সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৯১২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যা আগের প্রায় দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের হার ১৩.২ শতাংশ।

৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে সহস্রাধিক হাসপাতালে একযোগে করোনাভাইরাসের গণ-টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। সূত্র : বিবিসি

এমজে/