পিকে হালদারের দেশত্যাগ: দায়িত্বরত ৬৭ ইমিগ্রেশন পুলিশের তালিকা হাইকোর্টে

পিকে হালদারের দেশত্যাগ: দায়িত্বরত ৬৭ ইমিগ্রেশন পুলিশের তালিকা হাইকোর্টে

পাসপোর্ট জব্দ থাকার পরেও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পিকে হালদার) হালদার দেশত্যাগ করেন। এ ঘটনায় ওই সময় বেনাপোল স্থলবন্দরে দায়িত্বরত ৬৭ ইমিগ্রেশন পুলিশের তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।

সোমবার (১৫ মার্চ) সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে, পুলিশের ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছিল দুদক থেকে তাদের কাছে দেরিতে চিঠি পাঠানোর কারণে পিকে হালদার পালিয়ে যায়। কিন্তু পিকে হালদারের দেশত্যাগের ঘটনায় ইমিগ্রেশন পুলিশের ওই তথ্য সঠিক নয় বলে হাইকোর্টে পাল্টা লিখিত জবাব দাখিল করে দুদক। দুদকের পক্ষ থেকে লিখিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর পিকে হালদারসহ ২৪ জনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া চিঠি পরদিন ২৩ অক্টোবর সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে পাঠানো হয়, যা ইমিগ্রেশন গ্রহণ করে।

এর আগে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পিকে হালদার হালদারের পাসপোর্ট জব্দ থাকার পরও তাকে পালাতে সহযোগিতাকারী ইমিগ্রেশন, পুলিশ ও দুদকের কর্মকর্তাদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি পিকে হালদার মামলার আসামিদের জবানবন্দিতে যাদের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে দুদকের পদক্ষেপ জানতে চেয়েছিলেন আদালত।

এছাড়াও পি কে হালদার কাণ্ডে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ২০০৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কর্মরতদের তালিকা জমা দিতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চে পিকে হালদারের দেশে ফেরত আসতে কোনোরকম গ্রেফতার না করার নির্দেশনা চেয়ে একটি আবেদন করে তার প্রতিষ্ঠান আইএলএফএসএল। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত জানিয়েছিলেন- পিকে হালদার কবে, কখন, কিভাবে দেশে ফিরতে চান, তা আইএলএফএসএল লিখিতভাবে জানালে সে বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে। গত ৯ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পরবর্তীতে পিকে হালদারের দেশে ফেরার বিষয়ে গত ২০ অক্টোবর হাইকোর্টকে জানানো হয়। পিকে হালদারের প্রতিষ্ঠান আইএলএফএসএল’র পক্ষ থেকে হাইকোর্টকে জানানো হয়, ২৫ অক্টোবর দুবাই থেকে অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা আসার জন্য টিকিট কেটেছেন তিনি। বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায় ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।

সার্বিক দিক বিবেচনার পর পিকে হালদারকে দেশে ফেরার অনুমতি দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পিকে হালদার দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশের আইজি এবং ইমিগ্রেশন পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি কারাগারে থাকাবস্থায় পিকে হালদার যেন অর্থ পরিশোধের সুযোগ পান, সে বিষয়ে সুযোগ দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

পিকে হালদারের দেশে ফেরার বিষয়ে আইএলএফএসএলের করা আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। তবে পরে অবশ্য অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দেশে ফেরেননি পিকে হালদার।