করোনা সংক্রমণ: নমুনার পরীক্ষার লাইন দীর্ঘ হচ্ছে

করোনা সংক্রমণ: নমুনার পরীক্ষার লাইন দীর্ঘ হচ্ছে

করোনা সংক্রমণ ফের লাগাম মানছে না। ঊর্ধ্বমুখী মৃত্যুর হার। নমুনা পরীক্ষারও হারও বাড়ছে। গত তিন সপ্তাহ ধরে সংক্রমণের হার, মৃত্যুর হার এবং নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ার কারণ একটাই- স্বাস্থ্যবিধি না মানা। আবার কিছুটা হলেও দেশে ইউকে ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব রয়েছে। এমনটাই মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (২০ মার্চ সকাল থেকে ২১ মার্চ সকাল) পর্যন্ত করোনায় নতুন শনাক্ত দুই হাজার ১৭২ জন। মারা গেছেন ২২ জন।

রবিবার অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ। এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৫২ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাঝে সংক্রমণের হার ও নমুনা পরীক্ষা হার কমেছিল। কমে এসেছিল হাসপাতালসহ বুথের সামনের লাইনও। কিন্তু রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে আবারও নমুনা পরীক্ষার লাইন দীর্ঘ হচ্ছে।

মুগদা জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিন দেখা যায়, নমুনা দিতে এসেছেন অসংখ্য মানুষ। লাইনে দাঁড়ানো একজন মন্তব্য করেন, এ তো দেখি টিসিবির লাইন।

নমুনা দিতে আসা মানুষদের মধ্যে আগের মতোই পুরুষের সংখ্যা বেশি। তবে আগে যেমন বৃদ্ধদের দেখা যেত বেশি, সেখানে এখন তরুণদের আধিক্য। অধিকাংশের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

নমুনা সংগ্রহ বেড়েছে জানিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নুসরাত সুলতানা জানালেন, গতকাল (২০ মার্চ) নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ২৫০-এর মতো। তিন থেকে চার মাসের মধ্যেও এত নমুনা দিতে আসেনি মানুষ।

ডা. নুসরাত ‍সুলতানা বলেন, ‘নতুন এই স্ট্রেইন খুবই ভয়ংকর, খুবই সংক্রামক। এক কথায় খুবই বিপজ্জনক।’

দেশে এখন ২১৯টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এরমধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা হচ্ছে ১১৮টি পরীক্ষাগারে। জিন-এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা হচ্ছে ২৯টি পরীক্ষাগারে এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা হচ্ছে ৭২টি পরীক্ষাগারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ২১ হাজার ২৫৯টি, আর পরীক্ষা হয়েছে ২১ হাজার ১০৮টি।

এখন পর্যন্ত দেশে করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৪ লাখ ৯ হাজার ১১৯টি। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার ১৭টি। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ লাখ ৪৯ হাজার ১০২টি।

গতকাল শনিবার (২০ মার্চ) সপ্তাহের শেষদিনে সাপ্তাহিক বিশ্লেষণে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত সপ্তাহের (সাত মার্চ থেকে ১৩ মার্চ) তুলনায় চলতি সপ্তাহে (১৪ মার্চ থেকে ২০ মার্চ) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বেড়েছে সাড়ে ৮৫ শতাংশ।

গত সপ্তাহে মারা গিয়েছিলেন ৭৬ জন। চলতি সপ্তাহে ১৪১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, মৃত্যুর পাশাপাশি গত সপ্তাহের তুলনায় নমুনা পরীক্ষা, শনাক্তের হার এবং সুস্থতার হারও বেড়েছে।

গত সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৩২টি। চলতি সপ্তাহে এক লাখ ৩৯ হাজার ৬৬৬টি। নমুনা পরীক্ষার হার বেড়েছে ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ। গত সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৫১২ জন। চলতি সপ্তাহে ১২ হাজার ৪৭০ জন। শনাক্তের হার বেড়েছে ৯১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।