ঢাবিতে মোদিবিরোধী বিক্ষোভে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২০

ঢাবিতে মোদিবিরোধী বিক্ষোভে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২০

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর মশাল মিছিলের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের ওপর। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। 

মোদির বাংলাদেশে আসার এক দিন আগে বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চত্বর এলাকায় বাম সংগঠনগুলো ‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ’ ব্যানারে বিক্ষোভ করছিল। রাত আটটার দিকে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাতে হামলা চালান বলে বাম সংগঠনগুলোর অভিযোগ।

হামলার পর ক্যাম্পাসে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল। ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ প্রথম আলোকে বলেন, ৯টি ছাত্রসংগঠনের মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনসমূহের ব্যানারে সন্ধ্যা ৬টার দিকে টিএসসি থেকে মশাল মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে হাকিম চত্বরের সামনে অবস্থান নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি চিরন্তনের দিকে যায়। স্মৃতি চিরন্তনের উল্টো দিকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন। মিছিলের শেষ পর্যায়ে আনুমানিক রাত ৮টার দিকে অতর্কিতে তাদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সব কটি ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

রাত ৯টার দিকে টিএসসি এলাকায় লাঠিসোঁটা হাতে আবারও অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। ওই অবস্থান থেকে তাঁরা পরে মোটরসাইকেলে পুরো ক্যাম্পাসে মহড়া দেন। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি এপিসি, একটি জলকামান, একটি কার ও একটি জিপ দাঁড়ানো ছিল। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা রাজারবাগ থেকে এসেছেন বলে জানান। কোনো হামলার ঘটনা ঘটেছে কি না জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, এ সম্পর্কে তাঁরা কিছু জানেন না। এমন কোনো খবর পাননি। তাঁদের চারপাশে তখন বেশ কিছু লাঠিসোঁটা পড়ে থাকতে দেখা যায়। লাঠিসোঁটা পড়ে থাকতে দেখা গেছে স্মৃতি চিরন্তনের সামনেও। পাশাপাশি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নাম লেখা কিছু ফেস্টুনও পড়ে ছিল।

স্মৃতি চিরন্তনের সামনে দুজন চা–বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয় (নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হলো না)। তাঁরা বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরের গাছের ডাল, বাঁশ ও স্টিলের লাঠি হাতে এক দলকে অন্য দলের ওপর হামলা করতে দেখেছেন তাঁরা। বিকেল চারটা থেকে ওই এলাকাতেই চা বিক্রি করছিলেন ওই দুই বিক্রেতা।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে এপিসি ও জলকামানকে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়। এদিকে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উপাচার্যের অনুমতি ছাড়া পুলিশ ঢোকে না। কেউ কোনো অভিযোগ জানায়নি। তবে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছেন তাঁরা।