লকডাউনের খবরে বাজারে ভিড়

লকডাউনের খবরে বাজারে ভিড়

নতুন করে আগামী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন দিতে যাচ্ছে সরকার। এ খবরে শনিবার দুপুর থেকে রাজধানীর বাজারগুলোতে ভিড় বেড়ে যায় ক্রেতাদের।

পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলুসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে দোকানে দোকানে ভিড় করেন ক্রেতারা। ভিড় বাড়লেও বিকেল পর্যন্ত পণ্যের দাম বাড়ার তথ্য পাওয়া যায়নি।

বিক্রেতারা বলছেন, দুপুর থেকেই ক্রেতারা শুকনো পণ্য- পেঁয়াজ, আলু, ডিম বেশি করে কেনা শুরু করেছেন। বর্তমানে পণ্যগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে কম রয়েছে। ক্রেতারা যেভাবে পণ্য কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন, তাতে যেকোনো মুহূর্তে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। তবে ক্রেতারা অস্বাভাবিক আচরণ না করলে দাম বাড়ার তেমন সম্ভাবনা নেই।

মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘লকডাউনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই পেঁয়াজ, আলু বিক্রি বেড়ে গেছে। তবে দাম বাড়েনি। আগের মতোই পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকা এবং আলুর কেজি ২০ টাকা বিক্রি করেছি।’

পেঁয়াজ ও আলুর মতো রসুন ও আদার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান এই ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ ও আলুর মতোও আদা, রসুনের বিক্রি বেড়েছে। গতকালের মতো দেশে আদার কেজি ৬০ টাকা এবং দেশি রসুনের কেজি ৬০ টাকা বিক্রি করেছি।’

মালিবাগ হাজীপাড়ার মতো কারওয়ান বাজারে গিয়েও ক্রেতাদের বাড়তি ভিড় দেখা যায়। ক্রেতাদের ভিড় থাকলেও এ বাজারেরও পণ্যের দাম বাড়ায় তথ্য পাওয়া যায়নি।

বাজারটির ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, ‘সকালে যখন লকডাউনের খবর শুনেছি তখনই ধরে নিয়েছি যেকোনো মুহূর্তে ক্রেতারা বাড়তি কেনাকাটা শুরু করবে। সেরকম প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলাম। দুপুরের পর থেকেই ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়। পর্যাপ্ত পণ্য থাকায় দাম বাড়েনি।’

তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। ক্রেতারা অস্বাভাবিক আচরণ না করলে দাম বাড়ার সম্ভাবনা খুব কম, বরং রোজার মধ্যে দাম আরও কমতে পারে। কিন্তু আজ যে হারে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন আগামীকাল এই ধারা অব্যাহত থাকলে দাম বেড়েও যেতে পারে।’

শ্যামবাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা হাজী মোহাম্মদ মাজেদ বলেন, ‘লকডাউনের সংবাদ আমরা শুনেছি। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগের মধ্যে আছি। গত বছর আমরা যে লোকসান খেয়েছি তার ধাক্কায় এখনো সামলে উঠতে পারেনি। এখন আবার লকডাউন দেয়ায় কী হবে বলতে পারছি না।‘

তিনি বলেন, ‘এখনো আমাদের কাছে পেঁয়াজের ভালো মজুত রয়েছে। আজ পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। গতকালের মতো আজও পেঁয়াজের কেজি ২৩-২৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে সংকট হলে তখন স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়ে যাবে।’

কারওয়ান বাজার থেকে পণ্য কেনা আশরাফ আলী বলেন, ‘সোমবার থেকে লকডাউন দেয়া হচ্ছে। তখন পরিস্থিতি কী হবে বলা মুশকিল। এখন যেহেতু আলু, পেঁয়াজের দাম কম আছে তাই কিছুটা বাড়তি কিনে রাখছি। বাংলাদেশের বাজারে কখন কী হয় তার বিশ্বাস নেই।’

মালিবাগ হাজীপাড়া বৌবাজার থেকে বাজার করা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘সরকার যেহেতু লকডাউন দিচ্ছে তাই ১০ কেজি পেঁয়াজ ও ৫ কেজি আলু কিনে রাখছি। কিছুদিন পরেই রোজা। রোজায় পেঁয়াজ ও আলু একটু বেশি লাগে। রোজার আগে যেকোনো মুহূর্তে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।’