যুবলীগ-ছাত্রলীগের হাতে অবরুদ্ধ মামুনুল হক: উদ্ধার করল হেফাজত কর্মীরা

যুবলীগ-ছাত্রলীগের হাতে অবরুদ্ধ মামুনুল হক: উদ্ধার করল হেফাজত কর্মীরা

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হককে দ্বিতীয় স্ত্রী আমিনা তাইয়াবাসহ অবরুদ্ধ করে রেখেছিল ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মামুনুল হক ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে। মামুনুল হককে সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। এর আগে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মামুনুল হককে নানা রকম অপবাদ দিয়ে লাঞ্ছিত করে।

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি, পৌরসভা ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান রবীনসহ স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারা মামনুল হককে অবরুদ্ধ করার সময় উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, মামুনুল হককে রিসোর্টে অবরুদ্ধ করার খবর শুনে সেখানে ছুটে যান স্থানীয় হেফাজতের কর্মীরা। এ সময় ওই রিসোর্টে ব্যাপক ভাংচুর চালায় ক্ষুব্ধ হেফাজতের ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। এসময় রিসোর্টের মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন সোনারগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম, এসিল্যান্ড গোলাম মোস্তফা মুন্না, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টি আই মোশাররফ হোসেন, সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) তবিদুর রহমানসহ অর্ধশতাধিক সাংবাদিক। এক পর্যায়ে মাওলানা মামুনুল হককে পুলিশের কাছ থেকে বিক্ষুব্ধ হেফাজতকর্মীরা মুক্ত করে নিয়ে যায়।

জানা যায়, শনিবার বিকাল ৩টায় সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর বন্ধ থাকায় তিনি রিসোর্টের ৫০১ নম্বর রুমে উঠেন দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে। এ খবরে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের কিছু নেতাকর্মী বিকেল সাড়ে ৫টায় স্ত্রীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে। খবর পেয়ে সোনারগাঁও থানা পুলিশের একটি টিম রয়েল রিসোর্ট থেকে তাদের উদ্ধার করে।

মামুনুল হক বলেন, ‘আমি আমার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সোনারগাঁওয়ে বেড়াতে আসি। সোনারগাঁও জাদুঘরে গিয়ে জাদুঘর বন্ধ থাকা আমি বিকাল ৩টায় স্থানীয় সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে এসে অবস্থান নেই। পরে এলাকার যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন আমার সাথে খারাপ আচরণ করে। তারা আমাদেরকে হেনস্তা করে একপর্যায়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন ও পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামের শরিয়ত মোতাবেক আমি দ্বিতীয় বিয়ে করি গত দুই বছর আগে। সে আমার দ্বিতীয় স্ত্রী। আমি আল্লাহর কসম কাটতাছি সে আমার স্ত্রী তার প্রমাণ আমি দেখাবো। আমি কোনো অপরাধ করি নাই। কোনো দুর্বলতা আমার নাই।’

এদিকে খবর পেয়ে সোনারগাঁও উপজেলা প্রশাসনের ইউএনও মো: আতিকুল ইসলাম, এসিল্যান্ড গোলাম মোস্তফা মুন্না ও সোনারগাঁও থানা ওসি তদন্ত তবিদুর রহমানসহ কয়েকজন পুলিশ উপস্থিত হন।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান জানান, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক দু’টি বিয়ে করেছেন। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে শনিবার সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এসেছিলেন। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে লাঞ্ছিত করেছেন। স্থানীয়দের সাথে ধস্তাধস্তিতে মামুনুল হকের পরনে থাকা জামাটিও ছিঁড়ে গেছে।’

বিস্তারিত জানতে সোনারগাঁ থানার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের হেফাজত নেতারা।

সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তবিদুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, এখনই বিস্তারিত বলতে পারছেন না তিনি। তবে মাওলানা মামুনুল হক পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন তিনি।