বসুন্ধরার এমডির দেশত্যাগের বিষয়ে কিছু জানে না পুলিশ

বসুন্ধরার এমডির দেশত্যাগের বিষয়ে কিছু জানে না পুলিশ

রাজধানীর গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাটে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় “আত্মহত্যার প্ররোচনা” মামলায় অভিযুক্ত বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সায়েম সোবহান আনভীরের দেশত্যাগের বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনও তথ্য নেই।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, সায়েম সোবহান আনভীরের দেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে কোনও তথ্য জানা নেই। এ প্রসঙ্গে একই সুর অভিবাসন কর্তৃপক্ষেরও।

যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইমিগ্রেশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “বাংলাদেশ ও স্লোভাকিয়া দুই দেশের পাসপোর্ট অফিসের দেওয়া তথ্যানুযায়ী দেশ ছেড়ে যাননি আনভির। তবে কার্গো ফ্লাইটে করে লুকিয়ে দেশত্যাগ করলে, তা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।” বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আরও ভাল বলতে পারবে বলেও জানান তিনি।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক, এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান এ সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কার্গো বিমানে কারও পক্ষে বিমানবন্দর ত্যাগ করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, বসুন্ধরার এমডি দেশত্যাগ করেছে, এ ধরনের তথ্য যারা দিলো তাদেরই বিষয়টি পরিষ্কার করা উচিত। এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর মানে নেই।”

বিমানবন্দরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও তার দেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ ও সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া তথ্যানুযায়ী কোনও কার্গো ফ্লাইটে করে দেশ ছেড়ে যাননি সায়েম সোবহান আনভীর।”

বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এ ধরনের তথ্য পেলে অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে আবারও অনুসন্ধান করবেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থায় মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে তার বোন নুসরাত জাহান। এরপর গুলশান থানায় “আত্মহত্যার প্ররোচনার” অভিযোগ এনে বসুন্ধরার এমডির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সায়েম সোবহানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মুনিয়ার। প্রতিমাসে এক লাখ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে সায়েম সোবহান তাকে ওই ফ্ল্যাটে রেখেছিল। নিয়মিত ওই বাসায় সায়েম যাতায়াত করতো। তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো করে থাকতো। এ নিয়ে সায়েমের পরিবারের পক্ষ থেকে হুমকির মুখে ছিলেন মুনিয়া। মুনিয়ার বোনের অভিযোগ, তার বোনকে বিয়ের কথা বলে ওই ফ্ল্যাটে রেখেছিল। একটি ছবি ফেসবুকে দেওয়াকে কেন্দ্র করে সায়েম সোবহান তার বোনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। তাদের মনে হচ্ছে, মুনিয়া আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

এরআগে, গতকাল মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সায়েম সোবহানের ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত।