পরিস্থিতি ভারত, নেপালের মতো ভয়াবহ হতে পারে, আশংকা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

পরিস্থিতি ভারত, নেপালের মতো ভয়াবহ হতে পারে, আশংকা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বিপুলসংখ্যক মানুষ যেভাবে চলাফেরা করছে, তাতে ঈদের পর দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ভারত ও নেপালের মতো ভয়াবহ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে ভারতে নিয়মিত যাতায়াতকারী সীমান্তবর্তী এলাকার পরিবারের সব সদস্যের করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে সোমবার এক সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন বলে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এই ভার্চ্যুয়াল সভার আয়োজন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সীমান্তবর্তী চারটি বিভাগের (রংপুর, খুলনা, সিলেট ও চট্টগ্রাম) কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় যুক্ত ছিলেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, সীমান্ত এলাকার কোনো যানবাহন নিজ জেলার বাইরে যেন যেতে না পারে, সে ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশ থেকে ভারতে যাতায়াতকারী চালক ও সহকারীদেরও সঙ্গনিরোধ বা কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন তিনি।

দেশের একাধিক পরীক্ষাগারে চার দিন আগে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। যে দুজন ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষায় এই ধরন শনাক্ত হয়েছে, তারা ভারত থেকে আসা বাংলাদেশি নাগরিক। জনস্বাস্থ্যবিদ ও সরকারি কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, আরও মানুষের মধ্যে ভারতীয় ধরনের সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে। তাই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রয়েছে দীর্ঘ সীমান্ত। এই সীমান্তে স্থলবন্দর আছে অনেকগুলো। এসব বন্দর দিয়ে আসা মানুষ এবং পণ্যবাহী যানবাহনের চালকদের মাধ্যমে দেশে ভারতীয় ধরন ঢুকে পড়ার আশঙ্কা সব সময় ছিল।’ তিনি বলেন, গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটির সভায় সীমান্ত এলাকায় নমুনা পরীক্ষা, আইসোলেশন, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং ও কোয়ারেন্টিন বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমবারের অনুষ্ঠানে বলেন, ভারতীয় নতুন ধরনটি এখন নেপালে ছড়িয়ে গিয়ে সেখানে ভয়াবহতা সৃষ্টি করেছে। এই ভ্যারিয়েন্ট এখন বাংলাদেশেও চলে এসেছে।

এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রতিটি সীমান্ত এলাকার দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে কাজ করার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বর্ডার এলাকার ভারতে যাতায়াতকারী ব্যক্তির পরিবারহ সব মানুষকে দ্রুত ও বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। বর্ডার এলাকার কোনো যানবাহন নিজ জেলার বাইরে মুভমেন্ট (চলাচল) যেন করতে না পারে, সে ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’