জাতিসংঘসহ উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, দেশে-বিদেশে মুক্তি দাবি

জাতিসংঘসহ উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, দেশে-বিদেশে মুক্তি দাবি

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক, শিক্ষক, লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সব পেশার মানুষ। জাতিসংঘও রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ জানিয়ে অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন বিষয়ে শুনানি হয়। জামিন নিয়ে আদেশের জন্য রবিবার দিন রেখেছেন আদালত।

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটক হওয়া সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন পাওয়াটা তাঁর প্রতি কোনো দয়া, অনুগ্রহ, অনুকম্পা নয়। বরং জামিন পাওয়াটা তাঁর মৌলিক অধিকার। আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানিকালে তাঁর আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী এ কথা বলেছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভার্চ্যুয়ালি এ শুনানি হয়।

আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন প্রথম আলো নিয়োজিত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। তিনি আদালতকে বলেন, রোজিনা ইসলামের মামলাটি জামিনযোগ্য। জামিনের বিষয়ে যুক্তিও তুলে ধরেছেন তিনি।

আদালতের কাছে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ধারা ১২ উপস্থাপন করেছেন জানিয়ে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই আইনের সেকশন ১২-তে বলা আছে, যদি সেকশন ৩ ছাড়া অন্য কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলেও সে ক্ষেত্রে বলা আছে, তা আমলযোগ্য এবং জামিনযোগ্য।’

এহসানুল হক সমাজী বলেন, দণ্ডবিধির ৪৯৬ ধারা অনুযায়ী, জামিন পাওয়াটা তাঁর প্রতি কোনো দয়া, অনুগ্রহ, অনুকম্পা নয়। বরং জামিন পাওয়াটা হচ্ছে তাঁর মৌলিক অধিকার।

এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘জামিন পাওয়াটা হচ্ছে তাঁর আইনত অধিকার। শব্দটি এসেছে, শি ডিজার্ভস টু বি রিলিজড অন বেইল। সুতরাং এ ক্ষেত্রে তিনি জামিন পাওয়ার অগ্রাধিকার রাখেন। আমি আরও বলেছি, যেহেতু তিনি নারী এবং অসুস্থ, সুতরাং ধারা ৪৯৭, উপধারা ১-এর বিধান অনুযায়ী, তিনি একজন প্রিভিলেজড পারসন (বিশেষ সুবিধা বা অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি)। যেহেতু অফেন্সটা জামিনযোগ্য এবং সর্বোপরি জামিন পাওয়ার জন্য তিনি এই বিজ্ঞ আদালতের বিবেচনা পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন, সুতরাং তাঁর বিষয়টা জামিন মঞ্জুর করা হোক।’

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় পরিচিত মুখ রোজিনা ইসলাম গত সোমবার সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁকে একটি কক্ষে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় এনে তাঁর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় মামলা করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার রোজিনা ইসলামের রিমান্ড আবেদন নাকচ করে তাঁকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠান আদালত।