সিলেট এমসি কলেজে ছাত্রলীগের গণধর্ষণ

আমি বলির পাঁঠা, কোর্ট আদেশ প্রসঙ্গে কলেজ অধ্যক্ষ

আমি বলির পাঁঠা, কোর্ট আদেশ প্রসঙ্গে কলেজ অধ্যক্ষ

সিলেটের এমসি (মুরারিচাঁদ) কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণকাণ্ডের পর কলেজ কর্তৃপক্ষের গঠন করা তদন্ত কমিটির ১০০টি সুপারিশ কার্যকর করেছেন বলে দাবি করেছেন কলেজটির অধ্যক্ষ মো. সালেহ আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমি তো জানি, দায়টা আমার। শুরু থেকেই এ কথা বলছি। কিন্তু বাস্তবতা বুঝতে হবে। সব দায় আমার, আমি বলির পাঁঠা।’

বুধবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এমসি কলেজের অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর এক প্রতিক্রিয়ায় অধ্যক্ষ মো. সালেহ আহমদ এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে হাইকোর্টের আদেশের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অবহিত হবেন। তাঁর নিজের কোনো ভাষ্য নেই।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে কলেজের ছাত্রাবাসে এক তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের ঘটনায় একে একে গ্রেপ্তার হন ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিতি ছয়জন। ছাত্রাবাসের বাইরে থেকে সহযোগিতা করার অভিযোগে আরও দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলাটি এখন বিচারাধীন।

করোনাকালে বন্ধ কলেজ ও ছাত্রাবাসে তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ ঘটনার পর থেকে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কলেজ অধ্যক্ষ ও ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠন দাবি তুলেছিল। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের দায় তদন্তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষ পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে।

হাইকোর্টের নির্দেশের পর আজ অধ্যক্ষ মো. সালেহ আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি চাকরি করি। এ বিষয়ে আমার কর্তৃপক্ষ আছে। তারা বলবে। আমি শুধু আমার করণীয় নিয়ে কথা বলতে চাই। সব কটি তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে গত আট মাস কাজ করেছি। সব মিলিয়ে ১০০টি সুপারিশ ছিল। এগুলো কার্যকর করেছি।’

কী কী কার্যকর হয়েছে, জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, ‘ছাত্রাবাসের সীমানাপ্রাচীর উঁচু করে কাঁটাতারের বেড়া বসানো হয়েছে। হোস্টেল সুপার পরিবর্তন করেছি। নৈশপ্রহরী বরখাস্ত করা হয়েছে। ছাত্রাবাসে এখন নতুন চারজন সুপার নিয়োগ করা হয়েছে। বহিরাগত ব্যক্তিদের প্রবেশ বন্ধ করেছি।’

১০০ সুপারিশে ছাত্রসংগঠনগুলোর কার্যক্রম বিষয়ে কোনো পদেক্ষপ ছিল কি না, জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, ‘হোস্টেলে রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ রাখার নির্দেশনা আছে। কিন্তু এটা কার্যকর করতে হলে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা দরকার। এ বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের উদ্যোগও দরকার। কলেজ কর্তৃপক্ষ একা কিছু করতে পারবে না।’