বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না দর্শনার্থীদের

বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না দর্শনার্থীদের

দূর-দূরান্ত থেকে যারাই ঘুরে দেখার উদ্দেশ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাচ্ছেন তাদেরকেই প্রধান সড়কে তল্লাশি গেট থেকেই ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সাথে ফ্লাইট চলাচল সীমিত হওয়ার কারণে বিমানবন্দর এলাকায় নেমে এসেছে অনেকটা নিস্তব্ধতা। গত বুধবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় সরেজমিন খোঁজ নিতে গেলে মেলে এমনই চিত্র।

বিকেল ৫টা। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রধান ফটকের সামনের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে একাধিক পয়েন্টে তল্লাশি ডিউটি করছিলেন আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) পুরুষ ও নারী কর্মীরা। এসময় এ পথ দিয়ে যারাই আর্চওয়ে পয়েন্ট অতিক্রম করতে যান তাদেরকেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। এর মধ্যে যারা স্রেফ ঘোরার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করছেন তাদেরকে সেখান থেকেই ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার প্রথম নিরাপত্তা চৌকি (গেট) পার হয়ে দ্বিতীয় গেটে গিয়েও এপিবিএন সদস্যদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে অনেককে। প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া একাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপ করে জানা গেছে তারা বিমানবন্দরের ভেতরে একটু ঘুরতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের জানান, যাত্রী হলে অবশ্যই পাসপোর্ট, বিমান টিকিট দেখাতে হবে। আর যাত্রী আনার জন্য এলে বলতে হবে, সেই যাত্রীর বিস্তারিত জানাতে হবে। দ্বিতীয় গেটে দেখা গেছে, প্রথম গেটে কথা বলে আসা একই ব্যক্তিকে আবারো প্রশ্নের মুখে পড়তে।

বিমানবন্দরের প্রথম গেটে নিরাপত্তা তল্লাশির ডিউটি করছিলেন একজন নারী ও একজন পুরুষ এপিবিএন সদস্য। ভেতরে প্রবেশে লোকজনকে বাধা দেয়া হচ্ছে কেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে নারী এপিবিএন সদস্য (নেমপ্লেটে নাম নেই) এ প্রতিবেদককে বলেন, বিমানবন্দরে অনেক লোক ঘুরতে আসেন প্রতিদিন। তারা যাতে ভেতরে ঢুকতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে আমাদেরকে নির্দেশনা দেয়া আছে। শুধুমাত্র যাত্রী ও তাদের স্বজনরাই সঠিক তথ্য দিয়ে ভেতরে যেতে পারবেন বলে তিনি জানান।

কিছু দূর এগোতেই দেখা যায়, কিছু প্রাইভেট ও মাইক্রোবাস এবং স্টেশনওয়াগন মডেলের গাড়ি পার্ক করা। যে ড্রাইভওয়ে দিয়ে প্রতিদিন শত শত গাড়ি নেমে যায়, সামাল দিতে নিরাপত্তারক্ষীদের বেগ পোহাতে হয়, সেখান দিয়ে এক ঘণ্টায়ও কোনো গাড়ি নামার দৃশ্যের দেখা মেলেনি। তবে ক্যানোপির বাইরে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কিছু স্বজনদের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। ২ নম্বর যাত্রী টার্মিনালের সামনে সম্প্রতি বেশ কয়টি ফাস্টফুডের দোকান গড়ে উঠেছে। সেখানেও নেই কোনো কাস্টমার। দোকানি অলস সময় পার করছেন।

ফুড প্লাস নামের দোকানের কর্মচারী রাজ্জাক এ প্রতিবেদককে বলেন, এয়ারপোর্টে এখন মানুষজন নেই বললেই চলে। যার কারণে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য লাটে উঠেছে। আগে ১২ ঘণ্টায় ২৫-৩০ হাজার টাকা বিক্রি হলেও এখন হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। আবার বিমানবন্দরে বাইরের কোনো লোককে এখন ভেতরে আসতে দেয়া হচ্ছে না। তাদেরকে গেট থেকেই ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সামান্য কিছু ফ্লাইট ওঠানামা করলেও আমাদের কোনো লাভ দেখছি না। কারণ যেসব যাত্রী আসছেন তাদেরকে কোয়ারেন্টিনের জন্য সোজা ইমিগ্রেশন শেষেই গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যার কারণে বিমানবন্দর এখন খাঁখাঁ করছে।

এমজে/