চট্টগ্রামে পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতার পায়ে গুলি করার অভিযোগ

চট্টগ্রামে পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতার পায়ে গুলি করার অভিযোগ

চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদে পুলিশের বিরুদ্ধে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে সাইফুল ইসলাম (৩২) নামে এক ছাত্রদল নেতার দুই পায়ে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশের দাবি, ওই ছাত্রদল নেতা দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করলে তারাও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশের ৩ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে জানায় পুলিশ। গত বুধবার রাত দেড়টার দিকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার এশিয়ান হাইওয়ে লিংক রোড এলাকায় কথিত এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রদল নেতা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

আহত ছাত্রদল নেতা সাইফুল বার্মা কলোনি এলাকার নুরুল আলম কসাইয়ের পুত্র। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। সাইফুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সুজন গণশাধ্যমকে বলেন, পুলিশ সোর্সের মাধ্যমে সাইফুলকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে দুই পায়ে গুলি করা হয়েছে।

ছাত্রদল করতো সেটাই তার অপরাধ। ছাত্রদল করার কারণে তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা ছিল। যার ভয়ে অনেকদিন এলাকার বাইরে ছিল। সুজন বলেন, ঘটনার আগেরদিন সাইফুল গোপনে এলাকায় এসেছিল। বিষয়টি সে থানার সোর্স আনিসের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে জানিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় আনিস সাইফুলকে অক্সিজেন মোড়ের জামান হোটেলে চা খাওয়ার অফার করেন। সাইফুল যেতে না চাইলেও অনেকটা জোরাজুরির কারণে রাত ১০টার দিকে সেখানে যায়। এরপরই তার মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার সন্ধান না পেয়ে আমরা থানায় জানাই। সকালে জানতে পারি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারাত্মক আহত সাইফুলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, সাইফুল ইসলাম আমাদের বিগত কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। এলাকায় তার একটা ভালো অবস্থান আছে। তাই তাকে বাসা থেকে ডেকে এনে ক্রসফায়ারের নাটক সাজিয়ে চিরতরে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। তবে ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার রাত দেড়টার দিকে বায়েজিদ এশিয়ান হাইওয়ে লিংক রোড এলাকায় পুলিশের অস্থায়ী চেকপোস্ট দেখে আঠারো মামলার আসামি সাইফুল ও তার সহযোগীরা পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালালে সাইফুল গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই নাজিমুল ইসলাম, এসআই সাইফুল ইসলাম ও রবিউল হোসেনও আহত হয়েছেন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ সময় সাইফুলের সঙ্গের অন্য আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ৩টি কার্তুজ, ৩টি কার্তুজের খোসা ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

এদিকে, ঘটনায় সাইফুলকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করার অভিযোগ নিয়ে বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এরা তো অনেক কথা বলবে। সাইফুল ও তার পরিবারের সবাই পেশাদার সন্ত্রাসী। সাইফুলের বিরুদ্ধে ১৮টি ছাড়াও তার বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ২১টি এবং ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে ২০টি মামলা আছে। এরা পুলিশের ওপর হামলা চালাতে গেলে পুলিশ নিজেদের রক্ষায় গুলি চালালে এই ঘটনা ঘটে।

এমজে/