এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়েছে ৪৯ শতাংশ

এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়েছে ৪৯ শতাংশ

করোনার লাগামহীন বৃদ্ধি কারণে গেল সপ্তাহে (২০ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত) মৃত্যু বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৮.৬১ শতাংশ এবং একই সময়ে আগের সপ্তাহের (১৩ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত) তুলনায় গেল সপ্তাহে নতুন করে আক্রান্ত বেড়েছে ৪৯.১৫ শতাংশ। গেল সপ্তাহে আগের সপ্তাহের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে ১৮২ জন। সারাদেশে করোনার ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক (কমিউনিটি) সংক্রমণের কারণেই খুব দ্রুত মৃত্যু ও সংক্রমণ বেড়েছে বলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় পক্ষের চিকিৎসকেরা বলছেন। কারণ ভারতীয় এই ভ্যারিয়েন্টটি শরীরের প্রবেশ করার পর থেকে খুব দ্রুত আক্রান্তকে অসুস্থ করে ফেলে এবং অন্যান্য অসুখ রয়েছে এমন ব্যক্তি ও বয়স্কদের ফুসফুসকে খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। সে কারণে মৃত্যু বেড়েছে বলে তারা মনে করছেন। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টকে নিয়ন্ত্রণে সরকার ইতোমধ্যে আজ সোমবার থেকে সারাদেশে লকডাউন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড সংক্রান্ত তথ্যে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে (২০ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত) সারাদেশে মোট ১ লাখ ৭৬ হাজার ৮৭৮টি নমুনা পরীক্ষা করেছে এবং এর মধ্যে ৩৫ হাজার ১১১ জনকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে (১৩ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত) ১ লাখ ৪৯ হাজার ১৪০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আগে সপ্তাহে মোট ২৩ হাজার ৫৪১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। গেল সপ্তাহে সারাদেশে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৮৭ জন এবং আগের সপ্তাহে মারা গেছে ৩৯৫ জন। আগের সপ্তাহ থেকে গেল সপ্তাহে ১৮.৬০ শতাংশ নমুনা বেশি পরীক্ষা করা হয়েছে।

এদিকে ছুটির দিনে মৃত্যু ও আক্রান্ত দুটোই কমেছে। প্রত্যেক ছুটির দিনের ২৪ ঘন্টায় নতুন আক্রান্ত ও মৃত্যু তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। এটা হয়ে থাকে ছুটির দিন বলেই। গতকাল সকাল পর্যন্ত পূর্বের ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭৭ জনের এবং একই সময়ে সারাদেশে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৩৩৪ জন। একই সময়ে সারাদেশে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৯ হাজার ২৬২টি এবং সংক্রমণের হার ছিল ২২.৫০ শতাংশ। শতাংশের দিক থেকে গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে গতকালই সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটেছে।

এদিকে টিকার পরিমাণ কমে গেলে দেশব্যাপী টিকা দেয়ার পরিমাণও কমে গেছে। এখনো সরকারের হাতে সেরামের তৈরি কিছু অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রয়েছে। সেখান থেকে সারাদেশের টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে কিছু কিছু টিকা দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবারও দেশের বিভিন্ন টিকাকেন্দ্রে মোট ২ হাজার ৬৬ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত সারাদেশে মোট ৪২ লাখ ৮৩ হাজার ৮৪২ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিক দেয়া হয়েছে। এর বাইরে ৯ হাজার ৪৫৯ জনকে চীনা সিনোফার্ম কোম্পানির তৈরি প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এই কোম্পানির দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে ৪১৮ জনকে। সিনোফার্মের এই টিকা প্রথম ডোজ দেয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়। গতকাল সিনোফার্মের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৩৮৮ জনকে এবং দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে ৫০ জনকে। এ পর্যন্ত দেশব্যাপী ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জনকে প্রথম ডোজ টিকা দিয়েছে সরকার।

গতকাল একই সময়ে ঢাকা মহানগরীতে অন্যান্য দিনের তুলনায় অর্ধেক নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে কিন্তু আক্রান্তের দিক থেকে অন্যান্য দিনের চেয়ে প্রায় কাছাকাছি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টার পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগরীতে মোট ৭ হাজার ৭৪৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে কিন্তু আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৩২৮ জন। নমুনা পরীক্ষা সাপেক্ষে আক্রান্তের হার ১৭.১৪ শতাংশ। একই সময়ে ঢাকা মহানগরীতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৭ জন। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরী ছাড়া ঢাকা বিভাগের ১২টি জেলায় গতকালের একই সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৯২১ জন। সারা দেশের অর্ধেকের কিছুটা কম সংক্রমণ ছিল ঢাকা বিভাগে।

সংক্রমণের দিক থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় ৬৫৪ জন, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় ৩৬২ জন, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ৮৪৮ জন, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ২৭৫ জন, সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ১২২ জন, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ৭৪ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলায় ৭৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

অন্য দিকে ধীরে ধীরে হাসপাতালগুলোতে করোনার জন্য নির্ধারিত শয্যাগুলো পূরণ হয়ে যাচ্ছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত রাজধানীর ১৫ সরকারি হাসপাতালে ২৬৯টি শয্যা পূর্ণ ছিল করোনার রোগীতে। অপর দিকে এই ১৫ হাসপাতালের ৩৮৪টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ১১১টিতে রোগী ভর্তি আছে, খালি আছে ১৭৩টি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে মোট ২৪ হাজার ৭০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর আছে ১ হাজার ৬৪২টি, হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা আছে ১ হাজার ৬১৯টি।

খুলনা ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে খুলনা বিভাগে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় কমেছে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরো ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৮৪৮ জনের। শনিবার দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা: রাশেদা সুলতানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর এক দিন আগে শুক্রবার সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় রেকর্ড এক হাজার ৩৩২ জনের শনাক্ত এবং ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে কুষ্টিয়া ও যশোরে। কুষ্টিয়া ও যশোরে পাঁচজন করে ১০ জন, খুলনায় দুইজন এবং ঝিনাইদহ ও মেহেরপুরে একজন করে দুইজন মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৯০৪ জন। এ সময় মারা গেছেন ৮১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৯৩৯ জন।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাসে ও করোনা উপসর্গে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মৃত ১৭ জনের মধ্যে আটজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। আর নয়জন ভর্তি ছিলেন করোনা উপসর্গ নিয়ে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ২৬ দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ২৯৪ জন।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো: শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৫২ জন। এর মধ্যে শুধু রাজশাহীরই ৩১ জন ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের আটজন, নাটোরের ছয়জন, নওগাঁর তিনজন ও পাবনার চারজন রয়েছেন।

রাজশাহীতে শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে গত শুক্রবার ৩৪ দশমিক ৪৯ হয়েছে। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় করোনা শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৮৯ থেকে বেড়ে ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো তিনজন মারা গেছেন। তারা হলেন- নওগাঁ জেলার আব্বাস উদ্দিন (৭০) ও পারভীন বেগম (৫০) এবং জয়পুরহাট জেলার আসাদুজ্জামান (৬৫)। শনিবার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪৩ নমুনার ফলাফলে নতুন করে ৫৬ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হলেন ১৩ হাজার ৩৩২ জন এবং সুস্থতার সংখ্যা ১২ হাজার ৩৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে তিনজনের মৃত্যু হওয়ায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭১ জন এবং বর্তমানে করোনায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫৭১ জন।

এ দিকে করোনা বিস্তার রোধে বগুড়া সদর উপজেলা ও পৌর এলাকায় চলমান কঠোর বিধিনিষেধ আরো সাত দিন অর্থাৎ ৩ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি সদরের ২৫টি হাটবাজার উন্মুক্ত স্থানে বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার পর তা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।

টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি কালিহাতী উপজেলায়। এ নিয়ে জেলায় মৃত্যু হলো ১০৭ জনের। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার শতকরা ২৪ দশমিক ২৩ ভাগ। এ পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৯৩২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৪৮২ জন। অন্য দিকে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে টাঙ্গাইল, এলেঙ্গা ও কালিহাতী পৌর এলাকায় কঠোর লকডাউন চলছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে ভয়ঙ্করভাবে বাড়ছে করোনা রোগীর মৃত্যুও। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে মৃত্যু হয়েছে আরো তিন করোনা রোগীর। এ সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ২১৬ জন। শুধু একটি ল্যাবেই (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব) শনাক্তের হার ৫৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ৯টি ল্যাবে করোনার এক হাজার ৩৭ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বিআইটিআইডিতে নমুনা পরীক্ষায় ৬৭ জন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৪৬ জন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৩ জন, মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১০ জন, শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১০ জন, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ২৬ জন, মেডিক্যাল সেন্টার ল্যাবে পাঁচজন এবং কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় বেড়েই চলেছে মৃত্যুর মিছিল। প্রায় প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত হয়ে এবং উপসর্গে আট-নয়জন করে মারা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চার নারীসহ আরো নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত পাঁচ দিনের ব্যবধানে সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় ২৬ জুন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৬৭ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন অন্তত ৩১১ জন।

এ দিকে সাতক্ষীরায় কমেছে করোনা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ১৫৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ০৯ শতাংশ। এ নিয়ে ২৬ জুন পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছে তিন হাজার ১৬৭ জন।

নোয়াখালী অফিস জানায়, জেলায় বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ১২৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১০ হাজার ৮১৩ জনে। গত শুক্রবার রাতে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার জানান, ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৩৫ জনে।

পিরোজপুর সংবাদদাতা জানান, পিরোজপুরের নাজিরপুরে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। গতকাল শনিবার ১২টায় হাসপাতালের র্যাপিট এন্টিজেন্ট টেস্টে ২৫ জনের মধ্যে ১৫ জনের করোনা পজেটিভ বলে হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে। শনাক্তের হার ৭৫ ভাগ। এর মধ্যে নাজিরপুরের কৃষি অফিসার ও হাসপাতালের স্টাফ নার্স চারজন আক্রান্ত হয়েছেন।

এ বিষয়ে নাজিরপুর হাসপাতালের কর্তব্যরত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচ) ডা: ফজলে বারী জানান, অন্যান্য উপজেলার থেকে নাজিরপুরে কোভিড রোগী তুলনামূলক কম ছিল; কিন্তু হঠাৎ করে টেস্টে ৭৫ ভাগই করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। সচেতনতার অভাবে দিন দিন কোভিড রোগী বেড়েই চলছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। তাই সবাইকে মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করছি।

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গায় করোনাক্রান্ত হয়ে আরেকজন মারা গেছেন। এ ছাড়া ৬১ জনের নমুনায় আরো ২৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এ দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বলা হয়, সোমবার থেকে সারা দেশে লকডাউন। সে হিসাবে চুয়াডাঙ্গায় সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক লকডাউন চলবে। কঠোরভাবে এই লকডাউনকে প্রতিপালন করানো হবে।

এমজে/