বরিশালে এক নারীকে রিমান্ডে নিয়ে যৌনাঙ্গে আঘাতের অভিযোগ

বরিশালে এক নারীকে রিমান্ডে নিয়ে যৌনাঙ্গে আঘাতের অভিযোগ

বরিশালে এক হত্যা মামলায় একজন নারীকে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

রিমান্ড শেষে বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১লা জুলাই পুলিশ হাজির করে ঐ নারীকে।

ঐ নারীর আইনজীবী মজিবর রহমান বলেন, এই সময় তিনি আদালতের সামনে খুড়িয়ে হাঁটছিলেন।

এরপর ম্যাজিস্ট্রেট তার কাছে জানতে চান তার উপর কোন নির্যাতন করা হয়েছে কিনা। উত্তরে তিনি জানান তার যৌনাঙ্গে আঘাত করা হয়েছে।

মি. রহমান বলেন "জিজ্ঞাসাবাদের নামে তার শারীরিক এবং গোপনীয় জায়গায় নির্যাতন করেছে। তাকে যখন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আনা হয় তখন ম্যাজিস্ট্রেট দেখতে পান যে তিনি খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটচ্ছেন।"

"তখন তাকে জিজ্ঞেস করেন আপনাকে কি মারধর করছে? আপনাকে কি নির্যাতন করেছে? তখন তিনি উত্তর দেন- জী। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট একজন নারী কনস্টেবলকে সাথে নিয়ে খাসকামরায় নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন তার শরীরের গোপনীয় জায়গাসহ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতের চিহ্ন।"

এদিকে উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক এই অভিযোগ নাকচ করে দেন।

তিনি বলেন, এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া এবিষয়ে একটা বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

সরকার পক্ষের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর এই ঘটনার ভিন্ন বর্ণনা দিয়ে বলেন, মূল অভিযোগ থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য এখন এই ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে।

মি. জাহাঙ্গীর বলেন, "যখন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয় তখন সে কিছু বলেনি। ম্যাজিস্ট্রেট যখন জিজ্ঞাসাবাদ করে তখনও কিছু বলেনি। কিন্তু পরে জেল হাজতে যাওয়ার সময়ে গাড়ির মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যায়।"

"হাসপাতালে সে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বিবৃতি দিয়ে বলে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আসলে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য এখন এই অভিযোগ করা হচ্ছে। মানুষের দৃষ্টি যাতে অন্যদিকে চলে যায় সেজন্য নিউজ করে এই নির্যাতনের অভিযোগ করছে।"

আদালতের ঘটনা নিয়ে এই দুই আইনজীবী দুই রকমের বর্ণনা দিয়েছেন। কিন্তু সেখানে আসলে কী ঘটেছে বিবিসির পক্ষে সেটা জানা সম্ভব হয়নি।

এদিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ঐ নারীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে একটা প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে প্রতিবেদন সম্পর্কে জানার জন্য কিন্তু যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সর্বশেষ খবরে জানা যাচ্ছে বরিশাল পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য।