নারায়ণগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি

নারায়ণগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানীর ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এ কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাইন বিল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম বেপারীকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি চাইলে আরও লোক নিতে পারবে। যদি তারা মনে করেন, পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের লোক নিবে নিতে পারবে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এই কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন লাগার পর পরই গোটা ভবনে লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

আজ শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনজন এবং আজ শুক্রবার দুপুরের পর আরও ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সামনে বিকেলে এনটিভি অনলাইনের কথা হয় তদন্ত কমিটির প্রধান ও নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম বেপারীর সঙ্গে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আজই সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজও শুরু করেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদমর্যাদার কর্মকর্তা, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক, পুলিশের প্রতিনিধি, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং কলকারখানা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি।

এদিকে আজ বিকেলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) জিল্লুর রহমান ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমকে জানান, মরদেহগুলো একতলা থেকে চারতলায় ছিল। এখন ভবনটির পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় উদ্ধারকাজ চলছে। এখনো ধুয়া রয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, কী কারণে আগুন লেগেছে তা তদন্তের পর জানা যাবে। ধ্বংসস্তুপের ভিতরে আরও লাশ থাকতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন। আরেফিন আরো জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ছয়তলার কিছু কিছু জায়গায় আগুন জ্বলছিল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এর আগে আগুন লাগার পরপরই মিনা আক্তার (৪০) ও স্বপ্না রানী নামে দুই শ্রমিকের লাশ কারখানা থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে মুরসালিন (২২) নামে এক কর্মী রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি আগুন লাগার পর তিনতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন লাগার পর পরই গোটা ভবনে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে ঢামেক হাসপাতালে এবং ১৬ জনকে রূপগঞ্জ ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।