নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেছেন, জীবনে বড় ভুল করেছি ইন্ডাস্ট্রি করে। ইন্ডাস্ট্রি করলে শ্রমিক থাকবে। শ্রমিক থাকলে কাজ হবে। কাজ হলে আগুন লাগতেই পারে। এর দায় কি আমার?
শুক্রবার দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমি তো আর যেয়ে আগুন লাগিয়ে দেইনি। অথবা আমার কোনো ম্যানেজার আগুন লাগায়নি। শ্রমিকদের অবহেলার কারণেও আগুন লাগতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘এখন যারা বিক্ষোভ করছে, তারা কেউ শ্রমিক না। তারা বহিরাগত।’
মোহাম্মদ আবুল হাসেম আরও বলেন, ‘এখানে সাতটি ভবনে কাজ হয়, কিন্তু আগুন লেগেছে মাত্র একটিতে। পুরো ফ্যাক্টরিতে ৬০০-৭০০ শ্রমিক কাজ করে।’
ওই ভবনে কতজন কাজ করছিল?
সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সেটা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব না। কারণ অনেকগুলো ইউনিট বন্ধ ছিল।’
আগুন লাগার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু নিচের তলায় কার্টুন রাখা ছিল এবং বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ ছিল, তাই হয়তো আগুনের এই ভয়াবহতা। নিচের তলার কার্টুন থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। ওপরের তলাগুলোতে বিভিন্ন মেশিন ও যন্ত্রপাতি ছিল। যেহেতু খাবারের আইটেম তৈরি হয়, তাই বহু ধরনের দাহ্য পদার্থ ছিল। সেটা হয়তো আগুনের ব্যাপকতা বাড়িয়েছে।’
ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন?
দ্য ডেইলি স্টারকে মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেন, ‘আমি যাইনি, তবে আমার লোকজন সেখানে আছে। যারা মারা গেছেন, তারা তো আমারই ছেলে-মেয়ে। আমি খুব ভেঙে পড়েছি।’
‘আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব আমার ছেলে-মেয়েদের পাশে থাকতে। এটা একটা দুর্ঘটনা। ফ্যাক্টরির সবগুলো ইউনিট চালু ছিল না। লোকজন কম ছিল। তারপরেও যারা ছিল, তারা সবাই চেষ্টা করেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিন্তু পারেনি।’
ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে বিধ্বস্ত হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানা থেকে আজ ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উদ্ধারকর্মীরা। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ৫২ জনে দাঁড়াল।
গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এই জুস কারখানার ছয়তলা ভবনের নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে।-দ্য ডেইলি স্টার