ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা

ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে মোহাম্মদ সানি (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে এলোপাথারি কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এসময় সন্ত্রাসীরা আরো তিন যুবককে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে।

সোমবার রাতে উপজেলার গোলাকান্দাইল বেড়িবাঁধ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

নিহত মোহাম্মদ সানি গোলাকান্দাইল বিজয়নগড় এলাকার মিল্লাত হোসেনের ছেলে।

এদিকে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে একজনের নাম আলামিন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোলাকান্দাইল দক্ষিণপাড়া এলাকার মিছির আলীর ছেলে মাহফুজ ফেসবুকে মোহাম্মদ সানিকে নিয়ে একটি মানহানিকর স্ট্যাটাস দেয়। এ নিয়ে তাদের দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এছাড়া আগে থেকেই মাহফুজদের সাথে মোহাম্মদ সানিদের বিভিন্ন বিষয়া নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো।

রাত ৮টার দিকে মোহাম্মদ সানি ও তার লোকজন অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গোলাকান্দাইল বেরিবাঁধ এলাকায় মাহফুজকে খুঁজতে যায়। এসময় মাহফুজের সহযোগী দু’জনকে আটক করে ফেলে মোহাম্মদ সানিসহ তার লোকজন। এরপর তারা ধারালো অস্ত্রের মহড়া দেয়।

এসময় মাহফুজ, তার ভাই মাসুমসহ তাদের লোকজনও ধারালো অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাল্টা মহড়া দেয়। এক পর্যায়ে মাহফুজ, তার ভাই মাসুমসহ তাদের লোকজন মোহাম্মদ সানিসহ তাদের লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়ে।

মাহফুজ ও মাসুমসহ প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা মোহাম্মদ সানিকে প্রকাশ্যে রামদা, চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় হীরা, সায়েমসহ আরো তিন জনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

এদিকে এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রকাশ্যে এ ঘটনা দেখে পথচারী থেকে শুরু করে স্থানীয় লোকজন ছুটাছুটি করতে শুরু করে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিল্পাঞ্চল এলাকা হওয়াতে গোলাকান্দাইল এলাকার লাখ লাখ মানুষের বসবাস। স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, জমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। এখানে কয়েক দিন পর পর হত্যাসহ এ ধরনের মারামারি হানাহানির ঘটনা ঘটে আসছে।

এ এলাকায় স্থানীয় ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ নজর না দেয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এছাড়া এসব কিশোর গ্যাংদের ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এ ব্যপারে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের ব্যাপারে কঠোর ভাবে নজর দেয়ার অনুরোধ জানান স্থানীয়রা।

রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দু’জন আটক হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। কোনো অপরাধীর ছাড় নেই।

এমজে/