সেই জাপানি মায়ের ২ মেয়েকে উদ্ধার করলো সিআইডি

সেই জাপানি মায়ের ২ মেয়েকে উদ্ধার করলো সিআইডি

সেই জাপানি মা নাকানো এরিকো'র দুই শিশু মেয়েকে উদ্ধার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বাংলাদেশি স্বামীর কাছ থেকে দুই মেয়ে শিশুকে ফিরে পেতে টোকিও থেকে ঢাকায় এসে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই মা। হাইকোর্ট ৩১ আগস্ট দুই শিশুকে হাজির করতে তাদের বাবা ও ফুফুকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার আগেই মেয়ে দুটিকে উদ্ধার করলো সিআইডি।

রবিবার (২২ আগস্ট) সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিসানুল হক সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানান। তবে কখন কোথা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।

এর আগে ওই দম্পতির দুই মেয়েকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি আগামী ৩০ দিন ওই দুই মেয়েকে নিয়ে তাদের বাবার বিদেশ যাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। দুই মেয়েকে ফিরে পেতে মায়ের করা রিটের প্রেক্ষিতে আদেশ দেন বিচারপতি এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈত বেঞ্চ।

জানা গেছে, টোকিওতে বসবাস করা বাংলাদেশি ও বর্তমানে আমেরিকারও নাগরিক শরীফ ইমরান ২০০৮ সালে জাপানি নাগরিক ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. এরিকো নাকামোকে জাপানি আইনে বিবাহ করেন। তাঁদের ১২ বছরের দাম্পত্য জীবনে তিনটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ২০২১ সালে ইমরান-এরিকো দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ হলে মেয়েদের নিজের জিম্মায় নিতে চান শরীফ ইমরান। কিন্তু মায়ের সম্মতি না থাকায় তাদেরকে বাবার জিম্মায় দিতে চায়নি আমেরিকান স্কুল ইন জাপান কর্তৃপক্ষ।

একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় নিয়ে যান ইমরান শরীফ। এ নিয়ে টোকিওতে পারিবারিক আদালতেও মামলা হয়। মামলায় হেরে গেলেও বাবা ইমরান শরীফ না জানিয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। কোনো উপায় না দেখে বাংলাদেশে এসে রিট আবেদন করেন জাপানী নাগরিক। বৃহস্পতিবার বিচারপতি এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈত বেঞ্চ রিট আবেদনটি শুনে রুলসহ আদেশ দেন।

জাপানি মা ডা. এরিকো নাকামো'র আশা আদালতে ন্যায় বিচার পাবেন তিনি। তিনি বলেন, আইনজীবীদের সহায়তায় প্রথম পদক্ষেপ নিলাম। এটা শুধু মায়ের জিম্মা নয়, মা এবং সন্তানের ভালোর জন্য। আমি ছয় মাস আমার মেয়েদের দেখতে পারছি না। এই জন্য আমি আমার চাকরি ছেড়েছি। আরেক মেয়েকে রেখে এসেছি। আমি মেয়েদের মিস করছি। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে বিচার আছে।

এরিকো নাকামা জানান, তিনি বাংলাদেশে এসে ইমরান শরীফের সংগে যোগাযোগ করে মেয়েদের সংগে দেখা করতে চান, কিন্তু করোনার অজুহাতে তিনি বার বার এড়িয়ে যান। পরে তাকে চোখ বেঁধে হোটেল থেকে নিয়ে ইমরান শরীফের বাসায় নেয়া হয়, মেয়েদের সাথে ঘন্টাখানেক কাটানোর পর তাকে আবার চোখ বেঁধে হোটেলে নামিয়ে দিয়ে আসা হয়।