কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী আর নেই

কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী আর নেই

কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে আজ শনিবার বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর সূত্রাপুরের শিংটোলার নিজ বাসায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুলবুল চৌধুরীর মেঝ ছেলে এ আর রাফী চৌধুরী।

বুলবুল চৌধুরী ১৯৪৮ সালের ১৬ আগস্ট নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালের দক্ষিণবাগ গ্রামের নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলেসহ অসংখ্য গুণাগ্রহী রেখে গেছেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ছয় মাস আগে বুলবুল চৌধুরীর ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সারওয়ার আলমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ক্যানসার তাঁর শ্বাসযন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ায় তিনি কিছু খেতে পারছিলেন না। চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২১ সালে বুলবুল চৌধুরী একুশে পদক লাভ করেন। আর বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান ২০১১ সালে। এ ছাড়া তিনি হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, জসীমউদ্দীন স্মৃতি পুরস্কার এবং ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।

বুলবুল চৌধুরী তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) পড়ালেখা করেছেন। জগন্নাথ কলেজে গল্প লেখা প্রতিযোগিতায় ‘জোনাকি ও সন্নিকট কেন্দ্র’ গল্পের জন্য তিনি দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তাঁর প্রথম লেখা বের হয় ১৯৬৭ সালে। প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘টুকা কাহিনী’।

লেখালেখি ছাড়াও সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বুলবুল চৌধুরী। দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন দৈনিকে তিনি কাজ করেছেন।

বুলবুল চৌধুরী প্রকাশিত ছোটগল্প গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘টুকা কাহিনী’, ‘পরমানুষ’, ‘মাছের রাত’ ও ‘চৈতাঁর বউ গো’। উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘অপরূপ বিল ঝিল নদী’, ‘কহকামিনী’, ‘তিয়াসের লেখন’, ‘অচিনে আঁচড়ি’, ‘মরম বাখানি’, ‘এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে’, ‘ইতু বৌদির ঘর’, ‘দখিনা বাও’ ইত্যাদি।

বুলবুল চৌধুরীর আত্মজৈবনিক দুটি গ্রন্থের নাম ‘জীবনের আঁকিবুঁকি’ ও ‘অতলের কথকতা’। কিশোরদের জন্য লিখেছেন ‘গাঁওগেরামের গল্পগাথা’, ‘নেজাম ডাকাতের পালা’, ‘ভালো ভূত’ আর ‘প্রাচীন গীতিকার গল্প’।