বানের পানিতে ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন

বানের পানিতে ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন

উজানের ঢল ও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি এবং উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দেখা দিয়েছে বন্যা। এই বন্যার ফলে মানুষ যেমন পানিবন্দী হচ্ছে সেই সাথে ডুবে যাচ্ছে কৃষকের রোপণ করা ধানের ফসলি জমি ও বীজ তলা। অসময়ে হঠাৎ বন্যায় কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান লাগানো হয়েছে করা হয়েছে ব্যাপক বীজতলাও। চলতি আগস্ট মাসের শুরুতেই মাঝে মধ্যেই বৃষ্টিপাতের কারণে বিল ও নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেসব অঞ্চল পানিতে টইটুম্বুর ছিল। অপর দিকে যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ধলেশ্বরী নদীর পানি বাড়ায় উপজেলার সলিমাবাদ, ভারড়া, দপ্তিয়র, মামুদনগর ও মোকনা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কৃষকের স্বপ্ন সদ্য রোপণকৃত রোপা-আমন ধান নিম্নাঞ্চলে তলিয়ে গেছে। আবার শুরু হয়েছে উত্তরাঞ্চলের নদের অব্যহত পানি বৃদ্ধি ফলে কৃষক হতাশ।

উপজেলার ভারড়া ইউনিয়নের চর ভারড়া গ্রামের কৃষক বাছের উদ্দিন সরকারের ছেলে ইসহাক মিয়া এবার ছয় বিঘা জমিতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ করে রোপা-আমন ধানের আবাদ করেছেন। তিনি জানান, এবার বন্যা হবে না মনে করে আমি রোপা-আমন ধান লাগিয়ে ছিলাম। হঠাৎ বৃষ্টিপাতে আর নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার পুরো ছয় বিঘা জমির ধান প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে তলিয়ে যাওয়ার জমির লাগানো ধান পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ঘিওরকোল এলাকার চাষী রফিকুল ইসলাম রিপন জানান, ৯২ শতাংশ জমিতে ধান নিজে রোপণ করেছেন। তার সেলো মেশিন দিয়ে আরো প্রায় তিন একর জমিতে তিনি পানি সেচ দেন। পুরো প্রজেক্ট জুড়ে পানি আর পানি। মাঝে মাঝে কিছু কিছু জমির ধান ডুবে পাতা হালকা দেখা যায়। নদীর পানি এভাবে বাড়তে থাকলে ধানের অপূরণীয় ক্ষতি হবে বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মতিন বিশ্বাস বলেন, অসময়ে চলতি বন্যায় প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে ৪৯, বিআর ১১, ৮৭ জাতসহ বিভিন্ন জাতে উচ্চ ফলনশীল জাতে ধানের চারা নিমজ্জিত হয়েছে। টানা বৃষ্টি আর বন্যার কারণে কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও বন্যার পর ক্ষতি নিরূপণ করে তালিকা তৈরি করা হবে। সেই হিসেবে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যদি বন্যার পানি দিন দিন বাড়তে থাকে তাহলে কৃষিতে ব্যপক ক্ষতি হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, যদি নদীর পানি অব্যহতভাবে বাড়তে থাকে তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঠপর্যায়ে গিয়ে তালিকা করা হবে। সরকারি কৃষি প্রণোদনার সহায়তা এলে বন্যায় কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে উপজেলা কৃষি অফিস তাদের সর্বদাই পাশে থাকবে।

এমজে/