আরব আমিরাতের অনুমোদনের অপেক্ষায় শাহজালাল বিমানবন্দরের আরটিপিসিআর ল্যাব

আরব আমিরাতের অনুমোদনের অপেক্ষায় শাহজালাল বিমানবন্দরের আরটিপিসিআর ল্যাব

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেছেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে স্থাপিত পিসিআর ল্যাবের কার্যক্রম শুরু হবে আরব আমিরাতের অনুমোদনের পর। বিমানবন্দরে যে ছয় প্রতিষ্ঠানের ল্যাব আছে, এগুলোর মধ্যে শুধু একটি ল্যাবের অনুমোদন দিয়েছে আরব আমিরাত। বাকি ৫টির অনুমোদন এখনো মেলেনি। এই অবস্থায় আরব আমিরাত ফেরত যাত্রীদের ফ্লাইট নিয়ে আবারও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, যদি মঙ্গলবার রাতের মধ্যে ল্যাবের অনুমোদন পাওয়া যায় তাহলে ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। তিনি বলেন, আপাতত আর বিশেষ ফ্লাইটের অনুমোদন দেব না। আমরা চাচ্ছি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিমানবন্দরে যে ল্যাবটি বসিয়েছে, এটা যেন ব্যবহার করে যাত্রীরা যেতে পারেন।

মঙ্গলবার দুপুরে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আজকেও এমিরেটসের একটি ফ্লাইট ছিল। আমি সেটি বাতিল করে দিয়েছি। তাদের একটু চাপে রাখার কারণে এটা করেছি। আরব আমিরাতের নির্দেশনা অনুসারে বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেটা সোমবার প্রস্তুত হয়েছে এবং মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। সঙ্গত কারণে যাত্রীরা এখন আর যেতে পারছেন না। এর কারণ হলো, ছয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরে (এসওপি) আমিরাতের সম্মতি থাকতে হবে। এটি আমরা দুই সপ্তাহ আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। সেখানে এটা এখনো বিবেচনায় আছে।

মফিদুর রহমান বলেন, এসওপির সম্মতি দ্রুত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এটা হয়নি। এসওপি সম্মতি না পাওয়ায় পরীক্ষাও শুরু করা যায়নি। ছয়টি প্রতিষ্ঠান কেন, আমিরাত সে প্রশ্ন তুলেছিল। একটা প্রতিষ্ঠান হলে আমিরাতের সুবিধা হবে। ছয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একেক প্রতিষ্ঠানের একেক ধরনের যন্ত্র। এটার টেকনিক্যাল দিকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমিরাত জানতে চেয়েছে কে কীভাবে করতে চায়, এ জন্যই ছয়টি আলাদা এসওপি হয়েছে। এসওপিগুলো দূতাবাসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। আমিরাতের কমিটি যাচাই-বাছাই করছে। আমাকে দু’জন রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, এটা শেষ পর্যায়ে আছে। আমার ধারণা সবাই অনুমোদন পাবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আরব আমিরাতের অনুরোধে ও এমিরেটসের উদ্যোগে কয়েকটা ফ্লাইট গেছে পরীক্ষামূলকভাবে। এসব ফ্লাইটে ব্যবসার উদ্দেশ্যে এবং জরুরি কিছু যাত্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করে দূতাবাস। এই যাত্রীদের পরীক্ষার জন্য ছয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সংস্থাকে নির্বাচিত করে আমিরাত। সেই প্রতিষ্ঠানে করোনার পরীক্ষার পর তাদের আমিরাতে পাঠানো হয়েছে। দুইটি ফ্লাইট এভাবে গেছে। বেবিচক তাদের অনুরোধ রক্ষা করেছে।

এদিকে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসীদের যাওয়ার সুবিধার্থে বিমানবন্দরে ইতোমধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ও নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি এবং সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও অনুমতিপ্রাপ্ত কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। বিমানবন্দরে স্থাপিত ল্যাবে ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে স্যাম্পল পরীক্ষা করা হয়েছে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমোদিত কোম্পানিগুলোর এসওপি প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দিক থেকে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি। যেহেতু এই পরীক্ষাটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রিকুয়ারমেন্ট, সেহেতু তাদের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এখন পর্যন্ত একটি কোম্পানির এসওপি অনুমোদন করেছে। বাকি ৬ কোম্পানির বিষয়টি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এখন সংযুক্ত আরব আমিরাত এসওপিগুলোর অনুমোদন দিলেই পুরোদমে পরীক্ষা করা শুরু হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দ্রুততার সঙ্গে এসওপির অনুমোদন পেতে বিষয়টি নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রাখছেন এবং কাজ করছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমি এবং সচিব বিষয়টি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। সর্বোপরি আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা ও যাত্রীরা যাতে কোনো ধরনের দুর্ভোগ বা হয়রানির শিকার না হন, সেই জন্য দেশের বাইরে থাকা অবস্থাতেও প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে নির্দেশনা প্রদান করছেন।