ঘরে ঘরে পাহারা দিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো যায় না: সিইসি

ঘরে ঘরে পাহারা দিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো যায় না: সিইসি

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘এ–জাতীয় ঘটনা ঠিক পাহারা দিয়ে ঠেকানো যায় না। বাস্তবতা হলো এটা। আপনাদের এটা বুঝতে হবে এ দেশের নাগরিক হিসেবে। ঘরে ঘরে, মহল্লায় মহল্লায় পুলিশ দিয়ে পাহারা দিয়ে এ–জাতীয় অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো যায় না।

সিইসি মনে করেন, সহিংসতা ঠেকানোর একমাত্র উপায় নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহনশীলতা। সংঘাতের দায়দায়িত্ব প্রশাসন, পুলিশ বা নির্বাচন কমিশনকে দিলে হবে না। তারাই যে দায়ী, এটা বলার সুযোগ নেই।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সংঘাতে প্রাণহানির দায় কার—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘দায়দায়িত্ব কাকে দেব, আমার মনে হয়, যাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, তাঁদেরই যদি সহনশীল ভূমিকা থাকে, তাহলে এত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দরকার হয় না। আমাদেরও তৎপরতার দরকার হয় না।’

ইসি কি দায় এড়াচ্ছে—এমন প্রশ্নে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, ‘দায় এড়ানোর বিষয় নয়। ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে হয় না।’ নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে সিইসি বলেন, নরসিংদীতে রাত তিনটার সময় গোলাগুলি হয়েছে, এতে মানুষ মারা গেছে। রাত তিনটায় কে কোথায় যাবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা ইসির লোক সেভাবে থাকে না।

সিইসি বলেন, নির্বাচনের আগে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, প্রচার–প্রচারণার সময় হঠাৎ করে অঘটন ঘটে যায়, এগুলোর জন্য কেউ প্রস্তুত থাকে না। এই ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অজান্তে, তাদের অনুপস্থিতিতে ঘটে যায়। এগুলো ফৌজদারি অপরাধ। এ জন্য ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন এসব দেখছে।

নূরুল হুদা বলেন, অনেকগুলো ঘটনা ঘটে এলাকাভিত্তিক, দলীয় কোন্দল, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পুরোনো শত্রুতার জের থেকে।

সিইসি বলেন, বৈঠকে আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেগুলো আলোচনা করা হয়েছে। যখন যেখানে অসুবিধা দেখেছেন, তাঁরা মোকাবিলা করার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়, সেটা ঠিকই। কিন্তু তার কারণে সহিংস ঘটনা কাম্য নয়। অনেকগুলো জীবন চলে গেছে, এটা কারও কাম্য হতে পারে না। যাঁরা নির্বাচন পরিচালানা করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী সমর্থক এবং ভোটার; তাঁদের মধ্যে সহনশীলতা থাকতে হবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ইসি তদন্ত করে নির্বাচন স্থগিত করেছে। এ ধরনের তদন্ত প্রতিবেদন আসতে থাকবে, তার ভিত্তিতে ইসি ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, নির্বাচনী সহিংসতার সুযোগ নিয়ে গুপ্তহত্যাও হয়েছে। ইসি যে ফোর্স মোতায়েন করে, তা দিয়ে এটা থামানো বেশ কষ্টকর। এরপরও যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে ইসি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে, প্রতিনিয়ত তারা পর্যবেক্ষণও করছেন।