নির্বাচন কমিশনের সব মেশিনারি নিষ্ক্রিয়: এম সাখাওয়াত হোসেন

নির্বাচন কমিশনের সব মেশিনারি নিষ্ক্রিয়: এম সাখাওয়াত হোসেন

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদের যে নির্বাচন হচ্ছে-এটাকে কোনো নির্বাচন বলে না। এটা অরাজকতা।

জোর করে ভোট নেওয়ার কাজকেই কমিশন বৈধতা দিচ্ছে। নির্বাচনের কাজে কমিশন একেবারে ঠুঁঠো জগন্নাথের মতো দাঁড়িয়ে আছে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো প্রচেষ্টাও কমিশনের নেই। এই কমিশন থাকতে সামনে যে নির্বাচনগুলো হবে সেগুলো আরও রক্তাক্ত হবে। কারণ কমিশনের সব মেশিনারি নিষ্ক্রিয়।

তিনি আরও বলেন, এককভাবে একটি দল মার্কা নিয়ে নির্বাচন করাতে নানা বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। দলেরই একাধিক লোক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। দল-উপদলে চলছে শক্তির লড়াই। এসব নির্বাচনে জিতে আসা মানেই ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়শ্চতা। টাকার ছড়াছড়ি। ফলে প্রার্থীদের ওপর কেন্দ্রীয়ভাবে দলের নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণেই সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে-যাদের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা করা হচ্ছে তারাও পক্ষপাতের বাইরে বের হতে পারছে না। নিরাপত্তা বাহিনী, নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছে। এ কারণে নিজেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের পক্ষপাতিত্বের কারণে কোনো কিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত বলেন, সহিংসার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ততা। নির্বাচন কমিশনের পেছনে প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে। জনগণের টাকায় কমিশনাররা নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন।

বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শুধু সুষ্ঠুভাবে শুধু মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচনটা করতে পারছেন না। তারা সহিংসতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।

প্রকাশ্যে সরকারি দলের নেতা একে-৪৭ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো কখনো কখনো তারা বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে। গত ৫০ বছরের নির্বাচন কমিশন বিশ্লেষণ করে এ ধরনের নির্লিপ্ত কমিশন দেখা যায়নি।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ খুব কঠিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সদিচ্ছা দেখিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় তাহলেই শুধু সম্ভব। আমাদের কোর্ট কি কখনো নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞাসা করেছে নির্বাচনে এত প্রাণহানি কেন হচ্ছে?

যেসব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এসব অরাজকতা বন্ধ করা সেটি তারা করছে না। প্রতিষ্ঠানগুলো যতক্ষণ দায়িত্ব না নেবে ততক্ষণ এ অবস্থা থেকে বের হওয়া যাবে না।

এমজে/