নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে আগামী সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করছেন।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সংবাদমাধ্যমকে জানান, রাষ্ট্রপতি একটি, ‘স্বাধীন, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, শক্তিশালী ও কার্যকর’ একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আগামী রোববার অথবা সোমবার থেকে আলোচনায় বসছেন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে।
তিনি জানান, জাতীয় পার্টির সাথে প্রথম আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৩১টি দলের সাথেই আলোচনা হবে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সংলাপ শেষ করার প্রস্তুতি রয়েছে। এ জন্য একদিনে একাধিক দলের সাথে বৈঠক হতে পারে এবং এটা নিয়ে কাজ করছে বঙ্গভবন।
আবেদীন বলেন, সংলাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হতে পারে সরকারি দল আওয়ামী লীগের সাথে সংলাপ।
এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি 'সার্চ কমিটি'র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।
বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আগামী সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রপতি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আজকেই আমাদের জানানো হয়েছে। আনুষ্ঠানিক চিঠি এখনও পাওয়া যায়নি।
বঙ্গভবনের এক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গেই সংলাপ করবেন রাষ্ট্রপতি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির এই আলোচনাকে ‘সংলাপ’ বলা হলেও বঙ্গভবনের ভাষা অনুযায়ী বলা হয়, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা’।
সংলাপ শেষে সার্চ কমিটি গঠন করার পর সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই কমিটির কাজের সাচিবিক দায়িত্বও থাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের হাতে।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির হাতে। তবে সুনির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে তা গঠনের কথা থাকলেও সেই আইনটি এখনও প্রণীত হয়নি।
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে ইসি নিয়োগ দেওয়ার পর আবদুল হামিদও সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আসছেন।
বিএনপি ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতির এই সংলাপ বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসা দলটি বলছে, এই সংলাপ লোক দেখানো।
