রোহিঙ্গা নেতা আমীনের পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

রোহিঙ্গা নেতা আমীনের পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় অপহরণের প্রায় ১১ মাস পর রোহিঙ্গা নেতা সৈয়দ আমীনের পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার দুপুরে এফডিএমএন ক্যাম্প ১৪-এর প্রাক্তন মাঝি ইয়াকুবের পরিত্যক্ত ঘরের মেঝে খুঁড়ে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত সৈয়দ আমীন (৪০) টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২১ নম্বর চাকমারকূল রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের সি-৪ ব্লকের মুছা আলীর ছেলে। তিনি চাকমারকূল ২১ নম্বর শিবিরের সি-৪ ব্লকের সাব-মাঝি (সহকারী কমিউনিটি নেতা) ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে এ ঘটনায় হাকিমপাড়া ই/৩ ব্লকে মাঝি ও ভলান্টিয়ারদের সমন্বয়ে ব্লকরেইড পরিচালনা করে তিনজন এফডিএমএন দুষ্কৃতকারীকে আটক করা হয়।

আটকরা হলো— উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের ই-৩ ব্লকের বাসিন্দা মো. সালামের ছেলে মোহাম্মদ ইসলাম (২২), শিবিরের একই ব্লকের মো. কাশেমের ছেলে আব্দুল মোনাফ (২৬) ও মোহাম্মদ সালামের ছেলে মো. ইলিয়াস (২৮)।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, এ বছর জানুয়ারি মাসে চাকমারকূল ক্যাম্প ২১-এর সি/৪ ব্লকের (সাবেক এম ব্লক) সাব-মাঝি সৈয়দ আমীনকে অপহরণ করে ক্যাম্প-১৪ তে নিয়ে আসে তারা। অপহরণের পর ভিকটিমের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে ৮০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। দুষ্কৃতকারী শুক্কুরের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন মিলে সৈয়দ আমীনকে হত্যা করে ক্যাম্প ১৪-এর প্রাক্তন মাঝি ইয়াকুবের পরিত্যক্ত ঘরের মেঝেতে লাশ পুঁতে রাখা হয়।

এসব তথ্য পেয়ে শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ক্যাম্প ১৪-এর সিআইসিসহ থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ইয়াকুব মাঝির ঘর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়। অপহৃত মৃত সৈয়দ আমীনের লাশ পরনে থাকা কাপড়, বেল্ট ও মাথার চুল দেখে শনাক্ত করেন তার স্ত্রী হাসান বশরী।

তিনি আরও জানান, গত ১৭ জানুয়ারি বিকাল ৪টার দিকে চাকমারকূল ক্যাম্প ২১-এর এফডিএমএন দুষ্কৃতকারী সাহাব উদ্দিন (ঘর নং-৮২), আনোয়ার (আরসার হেড জিম্মাদার), আনোয়ার ফারুক ও সাদেক ভিকটিম সৈয়দ আমীনকে মুখ বেঁধে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।

৮-এপিবিএনের অধিনায়ক মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান জানান, ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে এফডিএমএন ক্যাম্প-১৪ হাকিমপাড়া ই/৩ ব্লকে মাঝি ও ভলান্টিয়ারদের সমন্বয়ে ব্লকরেইড পরিচালনা করে তিন এফডিএমএন দুষ্কৃতকারীকে আটক করা হয়।

তার স্ত্রী হাসান বশরী লাশের পরনে থাকা কাপড়, বেল্ট ও মাথার চুল দেখে ‘তার স্বামীর লাশ বলে শনাক্ত করে। দীর্ঘ দিন পর অপহৃত সৈয়দ আমীনের লাশ পেয়ে এফডিএমএন সদস্যদের মধ্যে স্বস্তি এসেছে।

উল্লেখ্য, ৮ এপিবিএন পুলিশের তৎপরতায় স্থানীয় রোহিঙ্গা ও ভলান্টিয়ারদের সমন্বয়ে রাত্রিকালীন পাহারা জোরদার করার কারণে সন্ত্রাসী রোহিঙ্গারা একের পর এক গ্রেফতার হওয়ায় ক্যাম্প এলাকায় আইনশৃঙ্খলা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের ঘটনাটি এফডিএমএন এলাকায় প্রথম ঘটনা।