ব্লিঙ্কেনকে লেখা চিঠি প্রসঙ্গে মোমেন

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অমূলক, হাসির খোরাক

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অমূলক, হাসির খোরাক

যে দেশে পুলিশ প্রতিবছর হাজার মানুষকে মেরে ফেলে, সেখানে ১০ বছরে বাংলাদেশে ৪০০ জন মারা যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় হাসির খোরাক তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাত কর্মকর্তা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার সিলেটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাব এবং সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর গত বছরের ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক (বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক) বেনজীর আহমেদ রয়েছেন। বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও পড়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এর আগে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে আমার ফোনালাপ হয়েছে। তখন যে কথা হয়েছিল, সেগুলোই চিঠিতে লিখেছি। তিনি (ব্লিঙ্কেন) আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে তার (যুক্তরাষ্ট্র) সরকারের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন।’

এই উদ্বেগের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমাদের এখানে গণতন্ত্র চর্চা আজকের না। যখন আমেরিকা আবিস্কৃত হয়নি, সেই ছয় শতকেও এই অঞ্চলে গণতন্ত্র ছিল।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘র‌্যাবের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যে অভিযোগ, তা অমূলক। বাংলাদেশে দশ বছরে ৬শ জন নিখোঁজের অভিযোগ তোলা হলেও আমেরিকাতে প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষ নিখোঁজ হচ্ছে এবং পুলিশি কারণে হাজানো মানুষ মারা যাচ্ছে। এসব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলছে না। তাদের গুলোকে বলা হয় লাইন অব ডিউটি। অথচ আমাদের এখানকার সামান্য কিছু ঘটনা নিয়ে অনেক কথা হয়। বলা হয় এক্সট্রা জুডিসিয়াল কিলিং। এসব হাসির খোরাক। ফলে আমার মনে হয়, তাদের নিষেধাজ্ঞা সঠিক হয়নি। এটি পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে। চিঠিতে একথাই লিখেছি।’

র‌্যাব দেশে মাদক, সন্ত্রাসরোধে সফলতা দেখিয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চিঠিতে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকসহ আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ ও কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বছরের সম্পর্ক। সবকিছুর আলোকে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

চিঠির জবাব এখনও আসেনি জানিয়ে তিনি বলেন, তারা তো এখন ক্রিসমাসের ছুটিতে আছেন। চিঠি এখনও তার হাতে পৌঁছেছে কি-না, তাও জানি না।