পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু

পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু

টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার সকাল থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে আজ সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৬৮ ট্রাক পণ্য আমদানি এবং ৩২ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক আব্দুল জলিল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ছয়টি শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিএসএফ ও পেট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির সঙ্গে কয়েক দফা ফলপ্রসূ বৈঠকের পর অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

বিএসএফের হয়রানি, বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না দেওয়া, ছয় মাস ট্রাকের কাগজপত্র বৈধ করাসহ বিভিন্ন দাবিতে ৩১ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয় শ্রমিক সংগঠনগুলো।

পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, গত বৃহস্পতিবার শুল্ক দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কলকাতায় দীর্ঘ সময় ধরে চলা বৈঠকে আন্দোলকারীরা শুল্ক দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সংগঠনের দাবি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পেট্রাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে একটি নোটিশ জারি করে।

পেট্রাপোল স্থলবন্দরের ম্যানেজার কমলেশ সাহানি জানান, সম্প্রতি পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবোঝাই ট্রাক থেকে স্বর্ণ, ডলার, গাঁজা, জাল লাইসেন্স জব্দ করে বিএসএফ। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের স্বার্থে সীমান্তে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে নির্দেশনা জারি করে। ট্রাকচালকসহ সংশ্লিষ্টদের কমন আইডি কার্ড চালু করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। যেসব গাড়ির কাগজ নবায়ন করা হয়নি, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনায় ট্রাকচালকসহ অন্যদের কমন আইডি কার্ড না হলেও আগামী একমাস আগের নিয়মে আমদানি-রপ্তানি চালু থাকবে। টার্মিনালে ট্রাকচালক ও খালাসিদের প্রবেশে তাঁদের সঙ্গে আপাতত আধার কার্ড বা ভোটারকার্ড সঙ্গে রাখলেই হবে।

কমলেশ সাহানি আরও বলেন, ‘সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সীমান্ত বাণিজ্যে দ্রুত চালুর বিষয়ে আন্দোলনকারীরা আজ শনিবার থেকে আমদানি-রপ্তানি শুরু করেন।’

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ডিরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, টানা পাঁচ দিনের ধর্মঘটে পণ্য সরবরাহ বন্ধ থাকায় দেশের শিল্প-কলকারখানাসহ গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের কাঁচামাল সংকটে উৎপাদন প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ধর্মঘটে সরকারকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হতে হয়।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আবদুল জলিল জানান, ভারতীয় পেট্রাপোল বন্দরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের সমঝোতা বৈঠকে ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন। আটকে পড়া পণ্য বন্দরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রুত পণ্য খালাস নিতে পারেন, সেজন্য মাঠ পর্যায়ের সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এমজে/