মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেট হলে শত শত রিক্রুটিং এজেন্সি বঞ্চিত হবে

মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেট হলে শত শত রিক্রুটিং এজেন্সি বঞ্চিত হবে

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে সীমিত সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি কাজ করলে শ্রমিক প্রেরণের গতি যেমন কমে যাবে, তেমনি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও শত শত রিক্রুটিং এজেন্সি তাদের ব্যবসার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। শুধু তাই নয়, আগের মতো যেকোনো সময় শ্রমবাজারটি বন্ধ হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের বলরুমে গতকাল বৃহস্পতিবার ‘মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে সরকারের সিন্ডিকেট বিরোধী অবস্থানকে সমর্থন এবং সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য বাজার উন্মুক্তের’ দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বায়রার সাবেক নেতারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়া থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে মালয়েশিয়া রিক্রুটিং এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ চারজন সদস্য শ্রমবাজারে সিন্ডিকেশনের বিরুদ্ধে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

বায়রার সাবেক সভাপতি আবুল বাশারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বায়রার সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূর আলী। সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমানের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী ও শাহাদাত হোসেনসহ জনশক্তি ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত কয়েক শ’ এজেন্সি মালিক।

লিখিত বক্তব্যে আবুল বাশার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় স্বার্থান্বেষী মহল মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আগের মতো মুষ্টিমেয় কয়েকজনের দখলে নিতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার ধৃষ্টতা দেখিয়ে আসছেন। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালু হওয়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়ের কারণে দেড় বছরের মাথায় ২০১৬ সালে মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বে গঠিত মালয়েশিয়ান সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়। বাতিল করে এসপিপিএ নামক ১০ এজেন্সির অটো ডিস্ট্রিবিউশন পদ্ধতি। শ্রমবাজারটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই দেশের নিরীহ কর্মীরা। এবারো সম্ভাব্য ২৫ সিন্ডিকেটের সদস্যরা অতিতের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বায়রার সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূর আলী বলেন, আমরা যতটুকু জানি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে এবারো সিন্ডিকেট করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার দাতো শ্রী আমিন নূর এবং ঢাকায় তার সহযোগী রুহুল আমিন স্বপন। গতবারের ১০ সিন্ডিকেটের একজন হিসেবে আপনি ছিলেন সেই প্রক্রিয়াটি কি তাহলে ভুল ছিল, আর এবার আপনি সেই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করছেন কেন, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ৮ বছর ধরে মালয়েশিয়ার মার্কেট বন্ধ ছিল, অনলি জি টু জি চালু ছিল প্লানটেশনের ক্ষেত্রে। তখন দেখা গেছে ১৪ লাখ রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, ৮ বছরে মাত্র ৭ হাজার লোক গেছে। বাকি লোকগুলো সাগর দিয়ে, শত শত লোক থাইল্যান্ডের জঙ্গলে মারা পড়ে। এ জন্য আমাদের এবং গভর্নমেন্টের পক্ষ থেকে এই মার্কেটটা আসলে চালু করা দরকার। যেহেতু মার্কেট বন্ধ ছিল সেহেতু আমরা একটা প্রক্রিয়া নিলাম, তখন দুই গভর্নমেন্টের প্রচেষ্টায় মার্কেটটা শুরু হলো, কিন্তু কথাটা ওরকম ছিল না। কথা ছিল কম খরচে কর্মী যাবে এবং যে ১০ জন রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে তারা শুধু সার্ভিস চার্জ নিয়ে যার যার লাইসেন্স আছে তাকে ব্যবসা করার সুযোগ দেবে। কিন্তু পরবর্তী সময় আমি দেখলাম সেই প্রক্রিয়া থেকে যে উদ্যোক্তা, মালয়েশিয়ার আমিন নূর সে এবং তার এখানকার একজন পার্টনার আছে, আমি নাম বলতে চাই না। সবাই জানেন, এই প্রক্রিয়া থেকে সরে আসছে। আমি প্রতিবাদ করাতে আমার সার্ভারটা ১৪ বার বন্ধ করে দেয়া হলো। মেডিক্যাল, সেটা আরেকটা প্রহসন। তখন আমি দেখলাম, কথা হয়েছে এক রকম আর কাজ হয়েছে আরেক রকম। এ জন্য এবার আমি সেই সিন্ডিকেটের মধ্যে নাই। সিন্ডিকেট থেকে সরে আসছি। আমার এই অবস্থাটা পরিষ্কার করার জন্যই এখানে আসছি।

এমজে/