সিইসি’র বক্তব্যে নাখোশ রাশিয়া

সিইসি’র বক্তব্যে নাখোশ রাশিয়া

ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে যে উদাহরণ টেনেছিলেন তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে রাশিয়া। নবনিযুক্ত সিইসি’র ওই বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনানুষ্ঠানিক বার্তা পাঠিয়েছেন ঢাকাস্থ রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি।

তার এই বার্তায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়া সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা এটাকে সিইসি’র একান্ত ব্যক্তিগত এবং অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশের ‘নিরপেক্ষ’ অবস্থানে কোনো হেরফের নেই বরং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিশেষ অধিবেশনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৪১ ভোটে পাস হওয়া নিন্দা প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে স্বেচ্ছায় ভোটদান থেকে বিরত থাকার মধ্যদিয়ে মস্কোর সঙ্গে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের স্বাক্ষর রেখেছে ঢাকা। প্রথম সংবাদ সম্মেলনে সিইসি আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোকে মাঠ ধরে রাখার পরামর্শ দিয়ে জেলেনস্কির উদাহরণ টানেন। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, মাঠে থাকতে হবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির মতো শক্ত হয়ে।

সিইসি’র ওই বক্তব্যকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান হিসেবে দেখছে দূতাবাস! আর এ জন্যই তারা বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এনেছে।

গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি সোমবার দায়িত্ব গ্রহণের পর নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সিইসি আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন। সেখানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। যার অন্যতম ছিল বিএনপি’র ভোট বর্জন প্রসঙ্গ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন আর যুদ্ধের চলমান ঘটনাপ্রবাহ টেনে আনেন। বলেন, ‘মাঠ ছেড়ে চলে গেলে হবে না। মাঠে থাকবেন। কষ্ট হবে। জেলেনস্কি হয়তো দৌড়ে পালিয়ে যেতে পারতেন। তিনি পালাননি। তিনি (জেলেনস্কির) বলেছেন-রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করবেন। তিনি রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সেখানে কিছুটা ধস্তাধস্তিও হয়।’

বিষয়টি নিয়ে আজ পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি একান্তই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ব্যক্তিগত মন্তব্য।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট। যা আমরা ইতিমধ্যে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে জানিয়ে দিয়েছি। আর এ নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশ তার অবস্থানের ব্যাখ্যাও দিয়েছে। সিইসি কথা বলতে গিয়ে হয়তো এমনি বলে ফেলেছেন, এটা একান্তভাবেই তার ব্যক্তিগত মত। তার মন্তব্য বা উদাহরণের সঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থানের কোনো সম্পর্ক নেই।’