টিসিবি’র ট্রাক কোথায় আসবে জানে না কেউ

টিসিবি’র ট্রাক কোথায় আসবে জানে না কেউ

ভর্তুকি মূল্যে পণ্য কিনতে এসে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাক আসা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। কোথায় ট্রাক থামবে ও কোথায় পণ্য বিক্রি হবে তা জানে না কেউ। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ট্রাকের অপেক্ষায় বসেছিলেন অনেকেই। অনেক স্থানে এসেছে, আবার অনেক স্থানে ট্রাক না আসায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে পণ্য না নিয়ে সাধারণ মানুষের বাড়ি ফিরতে হয়েছে। ফলে কম মূল্যে পণ্য কিনার আশায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। সোমবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

সূত্র জানায়, এলাকাভিত্তিক কাউন্সিলরদের ঠিক করে দেওয়া স্থানে টিসিবি পণ্য বিক্রি করে। কাউন্সিলর যে স্থান নির্বাচন করেন, সেখানে পণ্য বিক্রি করতে হয়। তাই প্রতিদিন একই স্থানে ট্রাক এসে পণ্য বিক্রি করতে পারে না। তাই টিসিবি’র ওয়েবসাইট থেকে মানুষ তালিকা দেখে কোথায় ট্রাক আসবে এটা জেনে যাতে পণ্য কিনতে আসেন। তাহলে মানুষের ভোগান্তি কমবে।

বেলা ১১টায় রাজধানীর পলাশীর মোড়ে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে- নির্ধারিত স্থানে টিসিবি’র ট্রাক নেই। রাস্তার পাশেই ট্রাকের অপেক্ষায় নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। এদিকে হঠাৎ গরম ও তীব্র রোদে এই অপেক্ষায় ভোগান্তি বেড়েছে। সেখানে আসা মো. মাহমুদুল হাসানবলেন, এদিকে মাঝে মাঝে টিসিবি’র ট্রাক এসে পণ্য বিক্রি করে। তাই সকাল ৯টা থেকে এসে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু ঘড়ির কাটায় এখন বেলা ১১টার বেশি বাজে। ট্রাক এখনও আসেনি। তিনি বলেন, বাজারে তেলের দাম অনেক। আমাদের মতো দিনমজুরের এতো টাকা দিয়ে তেল কেনা দায় হয়ে গেছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আর পারছি না। এখন যদি ট্রাক না আসে, তাহলে কষ্ট করে দাঁড়িয়ে ফিরে যেতে হবে। সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টিসিবির ট্রাক আসার কথা, কিন্তু আসেনি। আরও ৩০ মিনিট অপেক্ষা করেও এই স্থানে ট্রাকের দেখা পাওয়া যায়নি। ততক্ষণে কম মূল্যে পণ্য কেনার আশায় সেখানে প্রায় দেড়শ লোক জড়ো হয়ে গেছে। সবাই রাস্তার এপাশ ওপাশ দেখছেন। কোন দিক দিয়ে ট্রাক আসবে আর পণ্য কিনবেন। সেখানে আসা হালিমা বেগম বলেন, এখানে নিয়মিত ট্রাক আসে। তাই লক্ষ্মীবাজার থেকে এখানে এসেছি। জানি না ট্রাক আসবে কি না। তবে আগের দিন মাইকিং করে ঘোষণা দিলে সবাই জানতে পারবে। সিটি কর্পোরেশন বা কাউন্সিলরদের মাধ্যমে এই মাইকিং করা হলে ভালো হবে। এতে ভোগান্তি কমবে। আর মানুষ জানতে পারবে কোথায় ট্রাক আসবে।

অন্যদিকে, হাতিরপুল এলাকায় টিসিবি’র ট্রাকসেল কেন্দ্রে গিয়ে সাধারণ মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। সেখানে আগে থেকেই কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। ফলে মানুষ নির্ধারিত স্থানে ট্রাক আসার আগ থেকেই অপেক্ষা করেছেন। যখন বিক্রি শুরু হয়েছে, মানুষ পণ্য কিনতে পেরেছে। তবে ট্রাকে পণ্য বরাদ্দের তুলনায় মানুষ বেশি হওয়ায় অনেকেই পণ্য না নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এই স্থানে পণ্য কিনতে আসা মো. সালমান যুগান্তরকে বলেন, এখানে আগে থেকেই মাইকিং করে জানানো হয়েছে পণ্য বিক্রি হবে। তাই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু আমার সিরিয়াল আসার পর তেল শেষ হয়ে গেছে। তাই তেল না নিয়ে চিনি, মশুরডাল ও পেঁয়াজ কিনে বাড়ি ফিরছি।

এদিকে টিসিবি’র বিক্রয় কেন্দ্র থেকে একজন ক্রেতা প্রতিকেজি চিনি ৫৫ টাকা করে সর্বোচ্চ ২ কেজি কিনতে পারছেন। পাশাপাশি প্রতিকেজি মশুরডাল ৬৫ টাকা করে সর্বোচ্চ ২ কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। ১১০ টাকা লিটার ধরে সর্বোচ্চ ২ লিটার সয়াবিন তেল ক্রেতারা কিনতে পারছেন। আর ৩০ টাকা কেজি দরে একজন ক্রেতার কাছে ২ থেকে সর্বোচ্চ ৫ কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে।

এমজে/