‘র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জটিল’

মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র চুপ থাকবে না: আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ড

মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র চুপ থাকবে না: আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ড

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল) ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড বলেছেন, মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র চুপ থাকবে না। যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে সেখানেই যুক্তরাষ্ট্র কথা বলবে।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র পার্টনারশিপ ডায়ালগ শেষে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে রবিবার এভাবেই জবাব দেন ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, র‌্যাবের কার্যক্রমের ওপর নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ রয়েছে। র‌্যাবের বিষয়টি জটিল।

সংলাপে র‌্যাবের তিন মাসের কার্যক্রমের প্রতিবেদন দাখিল করে বাংলাদেশ।

ইউক্রেন বিষয়ে নুল্যান্ড বলেছেন, বাংলাদেশ জানে ইউক্রেনে যেটি ঘটছে সেটির আসল সত্য কি। কোনও উসকানি ছাড়াই নির্মমভাবে গণতান্ত্রিক ইউক্রেনের অখণ্ডতার সার্বভৌমত্বকে আক্রমণ করা হয়েছে। কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি সমাধানের জন্য আমাদের সব চেষ্টা রাশিয়া নস্যাৎ করে দিয়েছে। এখন পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশকে একসঙ্গে হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা একসঙ্গে সত্যি সেটি বলতে এবং এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি টানতে পারবো। ওই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারবো।

বাংলাদেশের সঙ্গে ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে স্বৈরশাসক ও গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে যুদ্ধ চলছে। আমরা জানি—আমরা কি ধরনের সমাজ তৈরি করতে চাই। কিন্তু রাশিয়া এর সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি পথ দেখাচ্ছে। এখনই সময় পৃথিবীর সব স্বাধীন মানুষ এবং রাষ্ট্রের এক হয়ে ইউক্রেনের জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা এবং আমরা এই আলোচনা করেছি।

শহীদুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ জানে ইউক্রেনে যেটি ঘটছে সেটির আসল সত্য কি’—এই বার্তাটি অত্যন্ত শক্ত। এছাড়া ‘বর্তমানে স্বৈরশাসক ও গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে যুদ্ধ চলছে’, এটিও একটি বড় বার্তা।

তিনি বলেন, রাশিয়া প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব হচ্ছে—তারা বিকল্প বা ভিন্ন একটি পথে হাঁটছে এবং এক্ষেত্রে ভারসাম্যমূলক অবস্থানের বিষয়টি খুব সামনে চলে আসে।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যৎ সম্পর্ক কীভাবে দেখতে চায় ওয়াশিংটন জানতে চাইলে নুল্যান্ড বলেন, ‘আমরা এটি নিয়ে কথা বলেছি। মার্কিন বৃহৎ ইন্দো-প্যাসিফিকের পরিপ্রেক্ষিতে এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করছি। মনে করি বাণিজ্য-ব্যবসা এবং প্রযুক্তি খাতে আমরা আরও কিছু করতে পারি।’

তিনি বলেন, ’ইন্দো-প্যাসিফিকে অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা, প্রযুক্তি উপাদান আছে এবং আমরা খুশি হবো বাংলাদেশ যেভাবে চায় সেভাবে এখানে অংশগ্রহণ করুক।’

আমরা মনে করি—একসঙ্গে সমুদ্র নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা যায় এবং এটি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নয়, এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশ নিয়েও সমুদ্র নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সম্ভব বলে জানান নুল্যান্ড।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, আমার বিবেচনায় এটি একটি পরিষ্কার বার্তা। গত ফেব্রুয়ারিতে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং স্বভাবত দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় অর্থনীতি বাংলাদেশকে পাশে চাইবে তারা।

তিনি বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিককে ভূ-রাজনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক– এই দুই লেন্স দিয়ে দেখে যুক্তরাষ্ট্র। এবং নুল্যান্ড আজকে নিরাপত্তা ও বাণিজ্য উভয় বিষয় নিয়েই কথা বলেছেন।