পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যু: এসআই প্রত্যাহার

পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যু: এসআই প্রত্যাহার

লালমনিরহাট সদর উপজেলায় পুলিশের হেফাজতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হালিমুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে’ তাঁকে আজ শুক্রবার জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।

রবিউল ইসলাম বলেন, ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

এর আগে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কাজীর চওড়া গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলামকে (২৫) পুলিশ নির্যাতন করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ তোলে পরিবার। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত থেকে দফায় দফায় লালমনিরহাট-পাটগ্রাম-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। এ সময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে অন্তত চার পুলিশ সদস্যকে আহত করেছেন তাঁরা।

লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে স্থানীয় একটি চড়ক মেলায় জুয়াবিরোধী অভিযানে হিরামানিক গ্রামের বাসিন্দা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় (৪০) ও কাজীর চওড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম খানকে (২৫) আটক করে পুলিশ। এ সময় রবিউল হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাত ১১টার দিকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু রাত সোয়া ১১টার দিকে সদর হাসপাতালেই রবিউল মারা যান।

রবিউলের পরিবারের সদস্যরা বলেন, রবিউল জুয়া খেলতে নয়, তাঁর সন্তানের জন্য খেলনা কিনতে মেলায় গিয়েছিলেন। আটকের সময় পুলিশের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে পুলিশ তাঁকে বেদম মারধর করে। তখন জ্ঞান হারান রবিউল। এরপর হাসপাতালে নিলে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁরা থানায় মামলা করবেন।

নিহত রবিউল ইসলাম খানের ছোট ভাই আরিফ খান বলেন, ‘আমার বড় ভাই কাঠের ব্যবসা করেন। তিনি মেলায় গেলে এসআই হালিম (লালমনিরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক হালিমুর রহমান) তাঁকে ধরে পুলিশের গাড়িতে জোর করে উঠানোর চেষ্টা করেন। তখন আমার ভাই বলেছেন, আমার তো কোনো দোষ নেই, আমি গাড়িতে উঠব কী জন্য। এসআই হালিম তখন ভাইকে অনেক মারধর করেন, লাথি-গুঁতা মারেন।’ তিনি আরও বলেন, রবিউলের কাছে ব্যবসার টাকা ছিল। তিনি পুলিশকে টাকা দিতে চাননি। টাকা নিয়ে টানাহেঁচড়া করেছে পুলিশ। এ কারণে রবিউলকে পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে। দায়ী পুলিশের বিচার দাবি করেন আরিফ।