মানুষ এখন মোট চাল খায় না: খাদ্যমন্ত্রী

মানুষ এখন মোট চাল খায় না: খাদ্যমন্ত্রী

দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে। মানুষ এখন আর মোটা চাল খেতে চায় না। দেশের অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষ সরু চাল খেয়ে অভ্যস্ত। শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে (কারাস) ‘ভলান্টারি কনজুমারস ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটির (ভোক্তা) আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তা স্বার্থ সুরক্ষায় প্রত্যাশা ও অর্জন’ শীর্ষক সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকেরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভিন্ন প্রকার ধান উৎপাদন করতে সফল হয়েছে বলেই ৭ কোটি মানুষের দেশে যে পরিমাণ মঙ্গা ছিল বর্তমানে ১৮ কোটি মানুষের দেশে এখন মঙ্গা নেই। একই সঙ্গে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে। মানুষ এখন মোট চাল খায় না। ৮০ শতাংশ মানুষ বর্তমান সরু চাল খায়। মিনিকেট নামে কোনো ধান না থাকা সত্ত্বেও এই নামে অনেক ধরনের চাল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো প্যাকেটজাত চাল বিক্রি করায় সরু চালের দাম বেড়েছে।

খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষকদের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা না দিলে তাঁরা ধান উৎপাদন করবেন না।

বাজার মনিটরিংয়ের প্রধান ভূমিকা পালন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ও মনিটরিং করে থাকে এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মূল ভূমিকা সরকারিভাবে কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা এবং খাদ্য সরবরাহ সচল রাখা, বিশেষত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর ক্ষেত্রে।

দেশে অন্তত ২৪ হাজার রাইস মিল রয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই ২৪ হাজার রাইস মিলের মালিকদের একসঙ্গে হয়ে সিন্ডিকেট করা সম্ভব নয়। তবে এদের মধ্যে যাদের ব্যাপক পুঁজি রয়েছে তাঁরা বিভিন্ন সময়ে মজুত করে। এই মজুতদারি ব্যবস্থাকে ভাঙতে হবে। যারা চাঁদাবাজি করে তারাও তো কোনো না কোনো ভোক্তার সন্তান। যারা খাদ্যে ভেজাল দেয় তারাও তো কোনো না কোনো পর্যায়ের ভোক্তা! এ সময় মন্ত্রী চাঁদাবাজি, মজুতদারি ও খাদ্য ভেজাল থেকে দূরে থেকে নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তার জন্য সবাইকে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানান।

ভোক্তা’র সভাপতি অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখরের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, গ্লোবাল টেলিভিশনের সিইও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বিজ্ঞানী ড. লতিফুল বারী, খ্যাতনামা লিগ্যাল ইকোনোমিস্ট, কলামিস্ট ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট এম এস সিদ্দিকী। মূল নিবন্ধ উপস্থাপনা করেন ভোক্তা'র পরিচালক মহসীনুল করিম লেবু।