মোমেন-জয়শঙ্কর বৈঠক আসামের গৌহাটিতে?

মোমেন-জয়শঙ্কর বৈঠক আসামের গৌহাটিতে?

বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি চলতি মাসের শেষ দিকে আসামের রাজধানী গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ভারতের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, এ বৈঠক আসামের রাজধানী গৌহাটিতে করা হোক। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশও ওই প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

ফলে সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি মে’র ২৭ থেকে ২৯ তারিখের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি গৌহাটিতেই হতে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে শিগগিরই।

‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ফোকাস এরিয়া হিসেবে তুলে ধরার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে, বৈঠকের ভেন্যু হিসেবে গৌহাটির নাম প্রস্তাব করার সেটাও একটা বড় কারণ’, বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।

আরও একটা কারণ হল, মে মাসের শেষ সপ্তাহে (২৮-২৯) গৌহাটিতেই ‘নদী’ বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক কনক্লেভের আয়োজন করেছে শিলং-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও থিঙ্কট্যাঙ্ক এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স। ওই কনক্লেভে যোগ দিচ্ছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনকেও সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ফলে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যদি সেসময় গৌহাটিতে থাকেন, তাহলে সেখানে বৈঠকই বা কেন করা যাবে না? এই ভাবনা থেকেই দিল্লির পক্ষ থেকে বৈঠকটি আসামের রাজধানীতে করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্য, পর্যটন, যাতায়াতসহ সব ধরনের সংযোগ বাড়াতে আগ্রহের কথা বাংলাদেশ সরকারও সম্প্রতি বহুবার বলেছে।

এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের ‘রিভার (নদী) কনক্লেভে’ও যেহেতু এই অঞ্চলের নদীগুলো ও তাদের জলসম্পদ ব্যবস্থাপনার নানা দিক নিয়ে বিশদে আলোচনা হবে– একই সময়ে একই জায়গায় অনুষ্ঠিতব্য দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও তার ছায়া পড়বে অবধারিতভাবে।

মোমেন-জয়শঙ্কর বৈঠক আসামের গৌহাটিতে?
ফলে গৌহাটিতে আসন্ন বৈঠকে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন আলোচ্যসূচিতে অনেকটা জায়গাজুড়ে থাকবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আভাস দেওয়া হয়েছে, পরের জেসিসি বৈঠকে অমীমাংসিত তিস্তা চুক্তির বিষয়টি জোরশোরে তুলে ধরা হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি এর আগে চীন, জাপান, রাশিয়া, ব্রিটেনের মতো বহু দেশের নেতাদের আহমেদাবাদ, বারানসি, চেন্নাইয়ের মতো বিভিন্ন শহরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি ২০১৬ সালের অক্টোবরে গোয়াতেও শীর্ষ বৈঠক করেছেন। তবে সেটা ছিল ব্রিকস সামিটের অবকাশে।

গৌহাটিতে দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক সফল হলে অচিরেই শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদিকে হয়তো দিল্লি ছাড়াও ভারতের অন্যান্য শহরে বৈঠক করতে দেখা যাবে।