সাময়িক সময়ের জন্য রেলমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলল টিআইবি

সাময়িক সময়ের জন্য রেলমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলল টিআইবি

রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে বরখাস্তের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে নৈতিক অবস্থান থেকে সাময়িক সময়ের জন্য রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। আজ শনিবার টিআইবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বিনা টিকিটে ট্রেনের এসি কামরায় বসে ভ্রমণ করছিলেন তিন যাত্রী। তাঁদের কাছ থেকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করেছিলেন টিটিই শফিকুল ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার রাতে পাবনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে এ ঘটনার পরই শফিকুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

বরখাস্তের এ ঘটনাকে ‘ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত’ বলে উল্লেখ করেছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো সংস্থা টিআইবি। তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ন্যায়নিষ্ঠভাবে দায়িত্বপালনের কারণে পুরস্কার পাওয়ার বদলে টিটিইকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এমন সিদ্ধান্তে দেশবাসীর কাছে এ বার্তাই পরিষ্কার হয়েছে যে ক্ষমতাধরেরাই শুধু নন, তাঁদের প্রভাব বলয়ের মধ্যে থাকা আত্মীয়-পরিজনদের জন্যও আইন প্রযোজ্য নয়।

এ ঘটনাকে ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি ‘নির্লজ্জ ও নিকৃষ্টতম’ উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে আজ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এখানে মূলত দুইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, প্রথমত, রেলমন্ত্রীর নিকটাত্মীয়দের বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ। অর্থাৎ, তাঁরা ধরেই নিয়েছিলেন যে রেলের প্রচলিত আইন তাঁদের জন্য প্রযোজ্য নয়। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট টিকিট পরিদর্শক তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করায় তাঁকে কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করেই তাৎক্ষণিকভাবে মুঠোফোনে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা।

কয়েকটি প্রশ্ন তুলে টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিনা টিকিটের যাত্রীরা টিটিইকে রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় কেন দিয়েছিলেন? তাঁদের সত্যিকার পরিচয় রেল কর্তৃপক্ষ যাচাই করেছিল কি না? যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগের জেরে টিটিইর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রেলমন্ত্রীর পরিচয় কতটা প্রভাব বিস্তার করেছিল? এসব বিষয় পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন।

রেলমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টিআইবি মনে করে, যেহেতু রেলমন্ত্রীর আত্মীয়দের জড়িয়ে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, অধিকন্তু বিনা টিকিটে ভ্রমণকারী ব্যক্তিরা রেলমন্ত্রীর পরিচয় ব্যবহার করেছেন, তাই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে নৈতিক অবস্থান থেকে সাময়িক সময়ের জন্য তাঁর (রেলমন্ত্রী) পদত্যাগ করা উচিত।

বিনা টিকিটে ভ্রমণের জন্য জরিমানা ও টিটিইকে বরখাস্তের বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। মন্ত্রীর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি সাড়া দেননি। পরে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।