এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণ: ছাত্রলীগ কর্মীদের বিচার শুরু

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণ: ছাত্রলীগ কর্মীদের বিচার শুরু

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে মামলার বিচার শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুরে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হক চৌধুরীর আদালতে পুলিশের করা মামলাটির অভিযোগ গঠন করা হয়।

গত বছরের ১৭ জানুয়ারি অপহরণ, গণধর্ষণ ও গণধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আটজনের নামে একই আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। তবে ওই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়নি। বুধবার চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলার অভিযোগেও ওই আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রাশিদা সাঈদা খানম বলেন, অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে অভিযুক্ত আট আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ধর্ষণ মামলা এবং আজ অভিযোগ গঠন হওয়া চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলা একই সঙ্গে চলবে। সাক্ষ্য গ্রহণও চলবে একসঙ্গে। আদালতের বিচারক পরবর্তী শুনানির তারিখ দেবেন। ওই শুনানিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে। দুটি মামলারই এক সঙ্গে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৪ জানুয়ারি ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের দুটি মামলার বিচারকাজ একসঙ্গে শুরু করার আবেদন করেছিল বাদীপক্ষ।

শুনানি শেষে বিচারক আবেদনটি খারিজ করে দেন। এরপরই বাদীপক্ষ মামলা দুটির বিচার কার্যক্রম একই আদালতে সম্পন্নের জন্য জানুয়ারি মাসে উচ্চ আদালতে মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালত এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ঘটনায় মামলা দুটির বিচার কার্যক্রম একসঙ্গে একই আদালতে সম্পন্নের আদেশ দেন। পরবর্তী সময়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, মহানগর দায়রা জজ আদালতে থাকা চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।

২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র‌্যাব। গ্রেপ্তার আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে তরুণীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের আট নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুমকে ধর্ষণে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে।