কারামুক্ত যুবলীগ নেতা সম্রাট

কারামুক্ত যুবলীগ নেতা সম্রাট

দুদকের দায়ের করা অবৈধ সম্পদের মামলায় জামিন পাওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট কারামুক্ত হয়েছেন। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তিনি মুক্তি পান।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরাণীগঞ্জ) জেলার মাহবুবুল ইসলাম বুধবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন সম্রাট। সেখান থেকে আমরা তাঁকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি এখন কারামুক্ত।’

অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচারের মামলার পর আজ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা দুদকের মামলায় জামিন পেয়েছেন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। ফলে, তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় মুক্তিতে বাধা নেই—বলে আজ জানিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী আফরোজা শাহনাজ পারভীন হিরা।

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিনের আদেশের পরে ১০ হাজার টাকা মুচলেকা দিয়ে আদালতে জামিননামা (বেইলবন্ড) দাখিল করেন আফরোজা শাহনাজ পারভীন হিরা। এসময় তিনি বলেছিলেন, ‘আজ বিকেলের মধ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুক্তি পাবেন।’

এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা বিকেল তিনটার দিকে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিনের কাগজ পেয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি ছাড়া পাবেন। তিনি এখন বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন। সেখান থেকেই মুক্তি পাবেন।’

আজ বুধবার সকালে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তিন শর্তে সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেন।

শর্তগুলো হলো—আদালতের অনুমতি ব্যতীত তিনি দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না, তাঁর পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার প্রতিবেদন আগামী ধার্য তারিখে জমা দিতে হবে।

নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার বিবরণীতে বলা হয়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন।

সম্রাট অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমণ্ডি, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া তাঁর সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

পরে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের সাবেক সভাপতি সম্রাটকে ক্যাসিনো মামলায় ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।