রাজস্ব আদায়ে হতাশা

রাজস্ব আদায়ে হতাশা

চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতায় রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের চেয়ে এবারের এই প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হলেও চলতি অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের যে টার্গেট দেয়া হয়েছে তা অর্জনে বড় ধরনের হোঁচট খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এনবিআরের। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩১ শতাংশ ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এই হিসাবে ১০ মাসে রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা ছিল দুই লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এ সময়ে প্রকৃত রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়েছে দুই লাখ ২৭ হাজার ৭৫৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ৪৭ হাজার ২৪৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এখন যদি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হয় তবে বাকি দুই মাসে এনবিআরকে আয় করতে হবে এক লাখ দুই হাজার ২৪২ কোটি টাকা। অর্থ্যাৎ প্রতি মাসে রাজস্ব আদায় করতে হবে ৫১ হাজার ১২১ কোটি টাকা। যা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বাজেটে প্রক্ষেপিত তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে না মনে করে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্য কমিয়ে এনবিআর টার্গেট দেয়া হয়েছে তিন লাখ এক হাজার কোটি টাকা। সংশোধিক টার্গেট অনুযায়ীও ১০ মাসে রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়নি। লক্ষমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ৩১ শতাংশ। বাদবাকি দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা যাবে না বলে সূত্র জানায়।

এদিকে এনবিআরের সর্বশেষ সাময়িক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে সবচেয়ে বেশি ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে কাস্টমস বা আমদানি খাতে। এ খাতে আদায় হয়েছে ৭৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই খাতে আদায় ছিল ৬১ হাজার ১৩১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

চলতি অর্থবছরের আলোচ্য সময়ে ভ্যাট বা মূসক খাতে আদায় হয়েছে মোট ৮৪ হাজার ৮৯৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বেশি। এই খাতে গত অর্থবছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল প্রায় ৭৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী অর্থবছরের গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত আয়কর খাতে মোট আদায় হয়েছে প্রায় ৬৯ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসের এই আদায় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের ১০ মাসে এই খাত থেকে আদায় হয়েছিল প্রায় ৫৯ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা।