‌‌‘আমরা বললে সুষ্ঠু, আমরা না বললে অসুষ্ঠু...তোমার আঙুল, টিপ দেব আমি’

‌‌‘আমরা বললে সুষ্ঠু, আমরা না বললে অসুষ্ঠু...তোমার আঙুল, টিপ দেব আমি’

ভোটে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগের পাঁচ দিনের মাথায় আবার বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী। এবার তিনি বলেছেন, ‌‌‘আমরা বললে সুষ্ঠু, আমরা না বললে অসুষ্ঠু...তোমার আঙুল, টিপ দেব আমি।’

আজ শুক্রবার মুজিবুলের এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি সিকদারপাড়ার এক আঙিনায় মুজিবুল নির্বাচনী সমাবেশে এই বক্তব্য দেন। তবে এ বিষয়ে মুজিবুল হক চৌধুরীকে ফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি লাইন কেটে দেন।

৫৪ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, প্যান্ডেলের নিচে চেয়ারে শ খানেক লোক বসে আছেন। লাইট জ্বলছে। দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরী।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, মুজিবুল হক চট্টগ্রামের ভাষায় বলেন, ‘এখানে সুষ্ঠু করি আমরা, অসুষ্ঠু করিও আমরা। আমরা বললে সুষ্ঠু, না বললে অসুষ্ঠু। যেদিকে যায় সেদিকে।’

পৌরসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন মুজিবুল হক। ওই নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ প্রভাব বিস্তার করেছে বলে তাঁর কথায় স্পষ্ট।

মুজিবুল হক বলেন, ‘'পৌরসভার ভোটের সময় আমাকে এক বিএনপি নেতা ফোন দিয়েছিল। সে বলল, ও ভাই আমাকে গালিগালাজ করছে। আমি বললাম, কী জন্য কথা বলছ বাবাজি। বাদ দাও। সে বলে, কেন সুষ্ঠু ভোট হবে বলেছে। আমি তাকে বললাম, সুষ্ঠু ভোট হবে তোমাকে কি লিখিত দিয়েছে সরকার? কেন ইভিএমে ভোট হবে। আমি বললাম, ইভিএম মানে কি জানো? তোমার আঙুল আমি টিপ দেব। ওটা হলো সুষ্ঠু ভোট।’

নির্বাচনের সবার ভোট দিতে যাওয়ার দরকার নেই বলেও মুজিবুল হক বক্তব্যে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মুসলমানের কাজ হলো একজন নামাজ পড়বে, পেছনে পাঁচ হাজার নামাজ পড়বে। এত মানুষের ভোট দেওয়ার দরকারও নেই।’

এর আগে ২৮ মে এক নির্বাচনী সভায় মুজিবুল হক বলেছিলেন, ভোটকেন্দ্রে টিপ দেওয়ার জন্য তাঁর লোক থাকবে। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নির্বাচন কমিশন থেকে তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশকে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

গত বুধবার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচন-সংক্রান্ত আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় পুলিশ সুপার রাশেদুল হক জানান, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। সত্যতা পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে ইসি। সভায় প্রার্থী মুজিবুল হক উপস্থিত ছিলেন।

নতুন ভিডিও বক্তব্যের প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আলম প্রথম আলোকে বলেন, এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই মুজিবুল হক এ বক্তব্য দিয়েছেন। তবে কবে দিয়েছেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মনে হচ্ছে, দুই-তিন দিনের মধ্যেই দিয়েছে। এ বিষয়েও ইসিকে জানানো হবে।