ডা. জোবায়দার জন্মদিন

ডা. জোবায়দার জন্মদিন

বেদনার যুগ, মানুষের যুগ, সাম্যের যুগ আজি,
কেহ রহিবে না বন্দী কাহারও, উঠিছে ডঙ্কা বাজি’।

মানুষের যুগের কথা মানসপটে এনে কবিতার লাইন দুটো লিখেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। সমাজে পুরুষ-রমণীর যে ভেদাভেদের দেয়াল, চেয়েছেন সেটাকে ভেঙে দিতে। সংঘাত-কষ্ট আর বঞ্চনা বিদুর পৃথিবীর পথচলায় নারীরা অগ্রণী। আজকের বাংলাদেশের পথচলায় যেসকল নারীরা অগ্রণী ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তাদেরি অন্যতম একজন ডা: জোবায়দা রহমান। কবি নজরুলের মানুষের যুগের সম্মুখ সারির একযোদ্ধা। রাজনীতির খাতায় নাম না লিখিয়েও যে মানবসেবা আর উন্নয়েনর জন্য কাজ করা যায় তার এক উদাহরণ তিনি। মানবসেবার ব্রত নিয়ে মানুষের যুগ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন স্বদেশ এবং পৃথিবীর মানুষদের জন্য। স্বপ্নের সঙ্গে তার নির্ঘুম পথচলা, বন্দি মানুষের দেয়াল ভাঙতে ছুটছে মানুষের কাছাকাছি সেবা আর মহানুভবতার বার্তা নিয়ে। মানুষের কল্যাণ প্রেমী সেই মানুষটির আজ জন্মদিন।

চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার পর শুধু তার মধ্যেই নিজেকে আবদ্ধ রাখেননি। যার প্রমাণ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিতে গঠিত জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এবং মাহবুব আলী খান স্মৃতি ট্রাস্ট। এদুটি সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং বর্হি:বিশ্বে রাত-দিন মানবসেবায় নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন জোবায়দা রহমান।

মাহবুব আলী খান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের মাধ্যমে তিনি আর্ত-মানবতার সেবা ও কার্ডিওয়াসকুলার রিসার্চ (Cardiovascular Research) উৎসাহিত করতে চান। যুক্তরাজ্যে হৃদরোগ বিষয়ক অসংখ্য কনফারেন্সে তিনি যোগদান করছেন। বিশ্বে আজ শতকোটি মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে হৃদরোগের প্রকোপ ভয়াবহ। হৃদরোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তিনি জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমেও কাজ শুরু করবেন। রোগাক্রান্ত, অসহায়, নিপীড়িত মানুষের জন্যেই তার চিত্ত সদা ব্যাকুল। বিশ্বে হৃদরোগের সচেতনতা সৃষ্টি ও গবেষণায় তিনি বর্তমানে মনোনিবেশ করছেন।

যুক্তরাজ্যের বিশ্বখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ইমপিরিয়াল কলেজ লন্ডনে অধ্যয়ন করা ডা. জোবায়দা দেশের অভিভাবক বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের পাশে থাকেন সদা। তাঁর উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের এতিমখানায় শিশু-কিশোরদের সহায়তা প্রদান ও উন্নত খাদ্য বিতরণ করা হয়। তিনি প্রতিনিয়ত তাদের লেখাপড়ার ও স্বাস্থ্যসেবার খোঁজ নেন। ধর্মীয় শিক্ষার প্রতিও তার অগাধ অবদান, শিশু-কিশোরদের তিনি অনেক সময় পবিত্র কুরআন শরীফ ও হাদিস শরীফ উপহার দেন। বগুড়ায় অবস্থিত এতিমখানায় অন্ধ শিশু-কিশোরদের জন্য তিনি চক্ষু চিকিৎসা ও চশমার ব্যবস্থা করেন।

বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দায় শিশু-কিশোররা জর্জরিত, উপেক্ষিত, সমাজে অবহেলিত, ক্ষুধার্ত মানুষের জন্যই কাজ করতে চান ডা. জুবাইদা। তাঁর জন্মদিনে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন ফুড ব্যাংকে খাদ্য বিতরণ করা হবে। পূর্বে সচ্ছল থাকা অনেক পরিবার যুক্তরাজ্যে বর্তমানে ফুড ব্যাংক ও বেবী ব্যাংকের মুখাপেক্ষী। বেবী ব্যাংকে শিশুদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যে তিনি বিভিন্ন চ্যারিটেবল সংস্থাকে সহায়তা করে থাকেন- তার মধ্যে ক্যান্সার রিসার্চ ও (Cancer Research, UK) ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন (British Heart Foundation) ও রেড ক্রস (Red Cross)।

ডা. জোবায়দা রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী। তারেক রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে নির্বাসিত থেকে লড়াই করছেন দেশে গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধার করার জন্য।

মানবসেবার পাশাপাশি লেখালেখি করেন জোবায়দা রহমান। কবিতা লিখতে পছন্দ করেন। অতি শীঘ্রই তার কবিতাসমগ্র প্রকাশিত হবে। আজ জন্মদিনেও তিনি পিতা রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের স্মরণে একটি কবিতা লিখেছেন।

করোনাকালীন দুঃসময়ে সমগ্র বিশ্বের মানুষের প্রতি তার মমত্ববোধ প্রকাশ পেয়েছে। Conquer Covid-19, A global initiative স্থাপনের মধ্য দিয়ে তিনি কোভিড সংক্রান্ত যাবতীয় বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার মানুষের কাছাকাছি পৌঁছেছেন। তদুপরি সারা বিশ্বের শিশু-কিশোরদের জন্য আয়োজন করেছেন ছবি আঁকার অন লাইন প্রতিযোগিতা, স্কুল বন্ধ থাকায় শিশু-কিশোররা মনের ভাব প্রকাশ করেছে ছবির মাধ্যমে। যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন স্থানে করোনাকাল সময়ে খাদ্য বিতরণ, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ হয়েছে তার নির্দেশনায়।

ডা. জোবায়দা রহমান বিজ্ঞান চর্চা ও উদ্ভাবন ছড়িয়ে দিতে চান। সেই লক্ষ্যে কোভিডকালীন সময়ে ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করেন জেডআরএফ-এর সহযোগিতায়। তিনি মনে করেন বর্তমান বিশ্বের অনেক সমস্যাই বিজ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ দ্বারা সমাধান সম্ভব। করোনাকালীন দুঃসময়ে কোভিড সচেতনতা সংক্রান্ত লিফলেট ও প্রয়োজনীয় ওষুধ কিভাবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছাবে সেগুলো তিনি তদারকি করেছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনা এবং ডা. জোবায়দা রহমানের জন্মদিন পালনে মক্কা, মদিনা ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্নস্থানে বিশেষ দোয়া, মোনাজাত ও তবারক বিতরণ করা হবে।

মালয়েশিয়ায় পুত্রাজায়া মসজিদ, কাতার, জেদ্দা, দুবাই, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্নস্থানে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও সিলেট দরগা শরীফ, বগুড়া বাইতুর রহমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, শহীদ জিয়ার জন্মস্থান বাগবাড়ী, গাবতলী পদ্মপাড়া মসজিদে আর রহমান, লাঠিগঞ্জ অন্ধ এতিমখানায় বিশেষ দোয়া ও খাদ্য বিতরণ করা হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ ও খাদ্য বিতরণ করা হবে। এছাড়াও যুক্তরাজ্যে ফুড ব্যাংক ও বেবী ব্যাংকে খাদ্য বিতরণ করা হবে।