ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছাড়াল সোয়া লাখ কোটি টাকা

ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছাড়াল সোয়া লাখ কোটি টাকা

দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ সোয়া লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। গত জুন শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। গত মার্চে যা ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। ফলে ৩ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১১ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণসংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

করোনার কারণে ব্যাংকঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে যে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তা তুলে নেওয়ার পর ধাপে ধাপে এখন খেলাপি ঋণ বাড়তে শুরু করেছে। এর আগে গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছিল প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। আর এখন মার্চ–জুনে এসে বাড়ল প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুন শেষে দেশে বিতরণ করা ব্যাংকঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা।

ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনাকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করার যে সুবিধা দিয়েছে, তা গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধে অনাগ্রহী করে তুলেছে। গত দুই বছর ব্যবসায়ীরা ঋণ শোধ না করেও ব্যাংকের খাতায় ছিলেন ভালো গ্রাহক। এ অবস্থায় গত জুলাইয়ে আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হিসেবে যোগ দেওয়ার পর বড় ধরনের ছাড় দিয়ে খেলাপি ঋণসংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সেই নীতিমালায় আড়াই থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়। আগে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে হতো। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ পাঁচ থেকে আট বছরে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। আগে এসব ঋণ শোধ করতে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় দেওয়া হতো। আবার নতুন করে ঋণও পাওয়া যাবে।

নতুন নীতিমালায় খেলাপি ঋণের সুবিধা প্রদান ও পুনঃ তফসিলের ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর ফলে ব্যাংকমালিকেরাই ঠিক করবেন, কোন ঋণ পুনঃ তফসিল সুবিধা পাবে। আগে ঋণ পুনঃ তফসিলের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগত। নতুন গভর্নর দায়িত্ব নিয়ে সেই দায়দায়িত্ব ব্যাংকগুলোর হাতে ছেড়ে দিয়েছেন।