বিএনপি অফিস দখল নিতে ঝোলানো হলো কৃষি অফিসের সাইনবোর্ড

বিএনপি অফিস দখল নিতে ঝোলানো হলো কৃষি অফিসের সাইনবোর্ড

ঠাকুরগাঁও জেলায় শনিবার বিএনপির অফিসে ভাঙচুরের পর আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। এ ঘটনার তিন দিনের মাথায় এখন সেখানে কৃষি বিভাগের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, তাদের দপ্তর থেকে সেখানে সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়নি।

জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুর জানান, ঠাকুরগাঁও রুহিয়া থানা বিএনপির কার্যালয়ের জায়গাটি তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি। ১৯৯৬ সালে তাঁর বাবা আবদুল জব্বার চৌধুরী ৫৩ শতক জমি বিএনপিকে কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য দেন। সেই থেকে বিএনপি ওই জায়গা ব্যবহার করে আসছে।

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বেলা তিনটায় রুহিয়া থানা বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আহ্বান করে। অন্যদিকে, একই দিন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচির ডাক দেয় রুহিয়া থানা মহিলা আওয়ামী লীগ।

এ ঘটনার জেরে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ নেতা-কর্মী আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে রুহিয়া ইউনিয়নের ঘনিমহেশপুর এলাকার থানা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করে আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

আজ সকালে স্থানীয় লোকজন থানা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বাঁশের খুঁটিতে টাঙানো একটি সাইনবোর্ড দেখতে পান। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগোজুড়ে দিয়ে সেখানে লেখা হয়েছে, ‘উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রুহিয়া, ঠাকুরগাঁও।’

জেলা বিএনপির সভাপতি মো. তৈমুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, জমির মালিকের সম্মতিতে ২৫ থেকে ২৬ বছর ধরে এই জায়গা বিএনপি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছে। এটা কোনো সরকারি জমি নয়। সরকারি দপ্তরের নাম দিয়ে একটি গোষ্ঠী এই জমি দখলে নিতে চাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সারা দেশে বিএনপির ওপর সরকার যে নির্যাতন-হয়রানি চালাচ্ছে, এটি তারই অংশ। তা না হলে কার্যালয়ে সরকারদলীয় লোকজনের হামলা ও ভাঙচুরের পর এ ঘটনা ঘটবে কেন?

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় বলেন, ‘রুহিয়ায় কৃষি বিভাগের একটি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কোয়ার্টার রয়েছে। যেটি এখন পরিত্যক্ত। সেই জায়গাটি আমাদের দখলে আছে। তবে বিএনপির কার্যালয়সহ ওই জায়গার কাগজপত্র আমাদের অফিসে সংরক্ষিত নেই। সেখানে কে বা কারা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে, তা বলতে পারছি না। সেই সাইনবোর্ড কৃষি বিভাগ থেকে যে ঝোলানো হয়নি, তা নিশ্চিত করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুহিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কার্যালয়ে কৃষি বিভাগের সাইনবোর্ড ঝোলায়নি। এমনটি করে অন্য কেউ ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে।