২০২৩ সালের পরীক্ষার্থীদের নিয়ে শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা

২০২৩ সালের পরীক্ষার্থীদের নিয়ে শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা

অতিমারি কোভিডের কারণে হয়নি ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। আর ২০২১ সালেও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। চলতি বছরও এই দুটি পাবলিক পরীক্ষা হচ্ছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। বাদ যাচ্ছে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ও ধর্ম বিষয়। ফলে বড় ধরনের শিখন ঘাটতিতে পড়ছে দুই বছর ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীরা।

গত দুই বছর সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে কয়েকটি বিষয় বাদ গেলেও ২০২৩ সাল থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে সব বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত বোর্ডের। এ ছাড়া এসএসসি পর্যায়ে কেবল তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা। আর এসএসসি ও এইচএসিতে অন্য সব বিষয়েই হবে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা। সময় থাকবে ৩ ঘণ্টাই।

বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ২০২৩ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পূর্ণ নম্বরে ও পূর্ণ সময়েই হবে। সব বিষয়েই পরীক্ষা হবে। শুধু সিলেবাসটা হবে পুনর্বিন্যাস করা।

থেমেছে কোভিডের চোখ রাঙানি। চলছে পাঠদানসহ স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। তারপরও ২০২৩ সালে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রকাশিত পুনর্বিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বোর্ড বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের সিদ্ধান্ত অস্বাভাবিক সময়ের। পাঠদানও হয়েছে সে অনুযায়ী।

অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রকাশিত পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস আরও ৬ মাস আগে আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রচার করেছি। সেখানে সিলেবাসে কিছুটা সংক্ষেপণ আছে। আর সেভাবেই আমাদের শ্রেণি কার্যক্রম চলছে।’

তবে শিক্ষা গবেষকরা বলছেন, আগামী বছরও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ যুক্তিযুক্ত নয়। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘমেয়াদি শিখন ঘাটতিতে পড়বে ও উচ্চশিক্ষায় হোঁচট খাবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। প্রয়োজন হলে বাড়তি ক্লাস নিয়ে হলেও পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের পরামর্শ তাদের।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। শিক্ষার্থীরা সিলেবাসে যখন জেনে যাবে যে, এর বাইরে প্রশ্ন আসবে না, তখন তারা কিন্তু এর বাইরে আর পড়াশোনা করবে না। তখন তাদের শিখন প্রক্রিয়াটাতে কিন্তু অনেক ঘাটতি থেকে যাবে।’