শুভ্র হত্যা মামলার রায় : মৃত্যুদণ্ড ৭, যাবজ্জীবন ৩, খালাস ৯

শুভ্র হত্যা মামলার রায় : মৃত্যুদণ্ড ৭, যাবজ্জীবন ৩, খালাস ৯

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যা মামলার ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড, তিনজনকে যাবজ্জীবন এবং নয়জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার সাড়ে ১১টার দিকে জনাকীর্ণ আদালতে মামলাটির রায় ঘোষণা করেন ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের তিন নম্বর আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মনির কামাল। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মামলার আসামিদেরকে কড়া পুলিশি পাহারার মধ্য দিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।

রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মইলাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াদ উজ্জামান রিয়াদ, গৌরীপুর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাকিব আহমেদ রেজা, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মোজাম্মেল হক, খাইরুল ইসলাম, মাঈন উদ্দিন, রুহুল আমিন ও শরীফুল ইসলাম নাঈম। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামিরা হলেন মাসুদ পারভেজ কার্জন, ছাত্রদলকর্মী শরীয়তউল্লাহ ওরফে সুমন ও যুবদলকর্মী রাসেল মিয়া। তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সানের পেনাল কোর্ডেও ৩০২ ধারা তৎসহ ৩২ ধারা এবং অন্য ধারার অভিযোগ সাক্ষ্য প্রমাণে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় ১৯ জন আসামির মধ্যে বাকিদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম, সৈয়দ মাজাহারুল ইসলাম জুয়েল, ছাত্রদলকর্মী রিফাত, মো. আবু হানিফা, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, যুবদলকর্মী মজিবুর রহমান, কামাল মিয়া ও শাহজাহান মিয়া।

এর আগে ৬ অক্টোবর আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়।

উল্লেখ্য যে, ২০২০ সনের ১৭ অক্টোবর গৌরীপুর পৌর শহরের পানমহালে মাসুদুর রহমান শুভ্রকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। বিচার চেয়ে শুভ্র’র ছোট ভাই আবিদুর রহমান প্রান্ত গৌরীপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

জানা যায়, গৌরীপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র। এ হত্যাকাণ্ডের পর আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠন বিচারের দাবিতে টানা ২১ দিন সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। ২০২১ সনের ৫ মে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (বর্তমানে ময়মনসিংহ কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ) মো. শাহ কামাল আকন্দ। প্রতিবেদনে চার্জশিটভুক্ত ১৪ জন ছাড়াও মামলার তদন্তকারী অফিসার অনুসন্ধানে আরো ৫ জনের সম্পৃক্ত পাওয়ায় ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে এ প্রতিবেদন দেন। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. মফিজুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত ২০২১ সনের ৩০ নভেম্বর চিঠিতে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২২ নভেম্বর তারিখে প্রকাশিত গেজেটে এক প্রজ্ঞাপনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন-২০০২ (২০০২ সনের ২৮ নম্বর আইন) এর ধারা-৬ অনুযায়ী শুভ্র হত্যা মামলাটি (গৌরীপুর থানার মামলা নম্বর-২২, (১৯ অক্টোবর) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। যার এস, আর, ও নম্বর- ৩৪৫ আইন/২০২১। এরপর মামলাটি বিচার কার্যক্রম শুরু হয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে।