কেউ হেঁটে, কেউ রিকশায়: একদিন আগেই রংপুরের সমাবেশস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল

কেউ হেঁটে, কেউ রিকশায়: একদিন আগেই রংপুরের সমাবেশস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল

গণপরিবহন বন্ধ করায় আগে ভাগেই সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করছেন বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা। পরিবহন ধর্মঘট থাকায় বাসের বিকল্প উপায়ে রংপুরে আসছেন তারা।

বিএনপি নেতারা জানান, দলের নেতাকর্মীরা কেউ মাইলের পর মাইল হেঁটে, কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি, কেউ রিকশা, কেউ কেউ অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে সমাবেশস্থলে আসছেন।

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে এসব নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। কারও হাতে কাঁথা-বালিশ, কারও হাতে শুকনো খাবার, আবার কারও হাতে রয়েছে প্ল্যাকার্ড।

নেতাকর্মীরা বলেন, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করেই সরকার গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে। গণপরিবহন বন্ধ রেখে শহরের ঢুকার পথে বিভিন্ন পয়েন্ট বাধা দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। তবে কোনো বাধাই এই সমাবেশে জনসমাগম ঠেকাতে পারবে না।

বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার। এদিন দুপুর ২ টায় শহরের কালেক্টরেট ঈদগাহে সমাবেশ শুরু হওয়ার করা রয়েছে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগমীর।

এদিকে, গণসমাবেশের আগে দিন ভোর ৬টা থেকে ৩৬ ঘণটার পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে জেলা মোটর মালিক সমিতি। এতে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। জেলার অভ্যন্তরীণ কিংবা আন্তঃজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে নানা মুখী সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা।

সমিতি জানিয়েছে, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, নসিমন-করিমন, অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ও প্রশাসনিক নানা সমস্যা দূরীকরণের দাবিতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে। যদিও বিএনপি বলছে, তাদের সমাবেশকে বাঁধাগ্রস্ত করতেই এই ধমর্ঘট। আর বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির ডাকা গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পরিবহণ ধর্মঘটের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল বলেছেন, ‘পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা যদি মনে করেন, বাসটি চললে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, আগের মতো যেমন বাস পুড়িয়ে দিয়েছে (বিএনপি-জামায়াত), সে অভিজ্ঞতা তো রয়েছে। সে অভিজ্ঞতা থেকে তাঁরা যদি সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই।’

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, শত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিতে আসছেন। বানিয়াপাড়া এলাকায় খোলা মাঠ এলাকায় চুলা জ্বালিয়ে সবজি-খিচুড়ি রান্না করে ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রংপুর শহরে মানুষ বাড়ছে।

সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘সরকার আমাদের সমাবেশ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পরিবহন ধর্মঘটের নামে দেশের মানুকে হয়রানি করাচ্ছে। তবে, কোনো বাধা আমাদের সমাবেশ ঠেকাতে পারবে না। মানুষ যে যেভাবে পারছেন সমাবেশে আসছেন। রাতের মধ্যেই পুরো মাঠ ভরে যাবে। মঞ্চের কাজ দ্রুতই শেষ হচ্ছে। দেশের মানুষ তাদের দাবি আদায়ের জন্য এই সমাবেশে যোগ দেবেন।’

সমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়ায় এখন আমাদের সমাবেশ দুদিন হচ্ছে। আজ থেকেই সমাবেশ শুরু হয়ে গেছে। মানুষ দল বেঁধে আসছে। আরও আসবে।’ রংপুরের দিকে আসতে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়ক ও দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সমাবেশে যোগ দিতে আশা নেতাকর্মীদের বাঁধা দিয়ে সরকারের কোনো লাভ হয়নি। উল্টো নেতাকর্মীরা উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। বাকিরা রাতের মধ্যে সবাই চলে আসবেন।’