নতুন বছরে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা

নতুন বছরে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা

আগামী বছরের শুরুতে নতুন বই পাবে না ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী। এমন শঙ্কা বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির। কারণ হিসেবে দুষলেন, ভালো মানের কাগজ ও উপকরণের দুষ্প্রাপ্যতা, সময় মতো ঋণপত্র খুলতে না পারা, দেরিতে টেন্ডার ও কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতাকে। যদিও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের দাবি নির্দিষ্ট সময়েই আসবে বই।

দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততোই কাজের চাপ বাড়ছে ছাপাখানায়। বই উৎসবের আগেই পাঠ্যবই ছাপানো শেষ করার তাড়া। কাজের এই গতি একটি সফল উৎসবের জন্য আশা জাগানিয়া হলেও ভেতরের খবর হতাশার।

এবার বই ছাপানোর দরপত্র হয়েছে অন্য বছরের চেয়ে দেরিতে। মুদ্রণশিল্প ব্যবসায়ীদের দাবি মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে আছে কাগজের সংকট। শুধু কি তাই, এনসিটিবি'র চাহিদা অনুযায়ী মান ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় ভার্জিন পাল্পও মিলছে না সহজে। মাধ্যমিকের কাজ ঢিমেতালে এগুলেও প্রাথমিকের কাজ দিন তিনেক বন্ধই রেখেছিলেন প্রকাশকরা। সরকার, পেপার মিল, ব্যাংকসহ সব অংশীজনের কয়েক দফা বৈঠকের পর সেই কাজ শুরু হলেও গতি ফেরেনি খুব একটা। প্রশ্ন উঠেছে কেন এই দুরবস্থা?

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, সিক্স ও সেভেনের বই। এখনো দুইটা ডামি যেতে পারেনি। তার মানে আপনি জানুয়ারির ১৫ তারিখের আগে বই চাচ্ছেন না। প্রাইমারির কিছু কিছু টেন্ডারের কন্টাক্ট হয়েছে চার-পাঁচদিন আগে। ইম্পোর্টেট যে আইটেমগুলো আটকে যাচ্ছে, সে আইটেমগুলো কিভাবে এনসিটিবি বলে সংকট থেকে আমরা নিরসন পাবো। এটার কোনও সুযোগ আছে।

যদিও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কণ্ঠে পুরনো সুর। বলছে, সব পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে, ঠিক সময়েই বই পাবে শিশু-কিশোররা। অথচ প্রকাশকরা বলছেন, এপ্রিল-মে মাসের আগে বই পাবে না শতভাগ শিক্ষার্থী।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ১ তারিখে বই দেয়ার ব্যাপারে ইনশাআল্লাহ এখনো আমি আশাবাদী। মাধ্যমিকে তো আশাবাদীই, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বই পাওয়ার বিষয়টা নিয়েও আমরা প্রেস মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, কাগজ না পেলে তো আর বই হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এনসিটিবি বলুক আর মন্ত্রণালয় বলুক আর যেই বলুক। এই বছরে সময়মতো বই যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বই ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যাবে। বাকি বই এপ্রিল-মের আগে যাবে বলে আমি মনে করি না।

নীতি নির্ধারণী মারপ্যাচ, কাগজের অপ্রাপ্তি কিংবা বইয়ের মান নিয়ে শঙ্কা। যাই থাককু না কেনো শেষ পর্যন্ত সব ছাপিয়ে বছরের শুরুতে শিশু-কিশোরদের হাতে বই উঠবে কিনা সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।