নয়াপল্টনে বিএনপি কর্মীদের ওপর পুলিশের বর্বর হামলা: গুলিতে নিহত ১, আহত অর্ধশত

নয়াপল্টনে বিএনপি কর্মীদের ওপর পুলিশের বর্বর হামলা: গুলিতে নিহত ১, আহত অর্ধশত

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছে পুলিশ। কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই পুলিশের গুলি, টিয়ারশেল আর লাঠিচার্জের মধ্যেই মকবুল হোসেন, ৪০, নামের এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন দলটির প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।

মকবুলকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গ পরিচয় জানা যায়নি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বেলা সাড়ে চারটা পর্যন্ত নয়াপল্টনের সংঘর্ষে আহত আটজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে আনা হয়। তাদের মধ্যে মকবুল মারা গেছেন। অন্যদের মধ্যে চারজনের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন রনি, মনির, আনোয়ার ইকবাল ও খোকন।

পুলিশের হামলা প্রসঙ্গে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দা সুমাইয়া বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা এসেছি। নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল করছিলাম। পুলিশ অতর্কিতভাবে দুই দিক থেকে আমাদের ওপর হামলা করে। ছররা গুলি ও কাঁদানের গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এখন আমাদের যাকে যেখানে পাচ্ছে, পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে।’

জানা গেছে, ১০ই ডিসেম্বরের সমাবেশকে ঘিরে নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছিল কয়েক শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী। বুধবার সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকে। বেলা ৩টার দিকে পুলিশ আচমকা হামলা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের।

একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ শুরু করে। বিএনপি নেতাকর্মীরাও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জবাব দেয়। শুরু হয় দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় স্পেশাল বাহিনী সোয়াতও।

প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পুরো নয়াপল্টন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের লাগাতার টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে টিকতে না পেরে পিছু হটে বিএনপি নেতাকর্মীরা। আশপাশের গলিতে অবস্থান নেয় তারা। এদিকে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে বেশকয়েকজন ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ হন। তারা হলেন- তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদল নেতা আলদীন, জুয়েল, আরিফ, নিয়াজ মোরশেদ। তাদেরকে রিকশায় করে হাসপাতালে নেয়া হয়।

পুলিশের হামলা প্রসঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর পুলিশের এ গুলি চালানো সম্পূর্ণ পরিকল্পিত।