পররাষ্ট্রে নতুনত্ব, ব্রিফ করলেন ‘মুখপাত্র’

পররাষ্ট্রে নতুনত্ব, ব্রিফ করলেন ‘মুখপাত্র’

স্পোকসপারসন বা মুখপাত্র নিয়োগ করে নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ের রেওয়াজ রয়েছে দুনিয়ার দেশে দেশে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন এমনকি পাকিস্তানেও পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র কাজ করছেন বহু বছর ধরে। বাংলাদেশে এমনটি ছিল অনুপস্থিত। সেগুনবাগিচায় ছিল না স্ট্র্যাকচার্ড তথা রুটিন ব্রিফিংয়ের কোনো ব্যবস্থা। বৃহস্পতিবার থেকে নতুন অধ্যায় শুরু হলো। নবনিযুক্ত মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন প্রথম গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন। উপস্থিত ডজনখানেক প্রশ্নের জবাবও দিলেন ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তা সেহেলী। তবে কিছু প্রশ্নের জবাব তৈরিতে তিনি সময় চেয়েছেন। জানিয়েছেন পরবর্তী ব্রিফিংয়ে তা নিয়ে হাজির হওয়ার চেষ্টা করবেন। কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে সময় নেয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু নিয়মিত ব্রিফিং না হওয়াটা অনাকাঙ্খিত।

স্বাধীনতার ৫১ বছরে স্পোকসপারসন নিয়োগের উদ্যোগ যে ছিল না, তা কিন্তু নয়। বহিঃপ্রচার অনুবিভাগে পেশাদার সাংবাদিকরা যখন দায়িত্ব পেয়েছেন তারা রুটিন ব্রিফিংয়ের চেষ্টা করেছেন। কখনো সফল হয়েছেন। কিন্তু তা প্রতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। মিডিয়ার চাওয়া, দীর্ঘ অপেক্ষা কিংবা মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে অনির্ধারিত ব্রিফিংগুলো হতো। বেশির ভাগই মন্ত্রী বা সচিব ব্রিফ করেন। এভাবেই কেটেছে বছরের পর বছর। কিন্তু সরকারের তরফে আগেই বলা হয়েছে, ২০২৩ সাল হবে ব্যতিক্রম। এই বছরে বেশ নতুনত্ব আনা হবে সেগুনবাগিচায়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কিংবা সিনিয়র সচিব গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন প্রয়োজনে, ইস্যু বিবেচনায়। তবে সাপ্তাহিক ব্রিফিং করবেন জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক। তিনিই পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন। 

উল্লেখ্য, গত সোমবার অনানুষ্ঠানিকভাবে নতুন মুখপাত্রকে পরিচয় করিয়ে দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতি বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে। ব্রিফিং সফল করতে কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সহায়তাও চান তিনি। পরে মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (মিডিয়া) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মুখপাত্রের দায়িত্ব অর্পণ ও সাপ্তাহিক ব্রিফিং সম্পর্কে জানিয়ে বলা হয়, প্রতি বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় ওই ব্রিফিং হবে। তবে বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি থাকলে পরবর্তী কর্মদিবসে তা অনুষ্ঠিত হবে।

স্মরণ করা যায়, মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক অ্যাসাইনমেন্টে ছিলেন। ঢাকায় তিনি আমেরিকাস অনুবিভাগের পরিচালক ছিলেন। জনকূটনীতি বিভাগে দায়িত্ব নেয়ার আগে মন্ত্রণালয়ের একমাত্র পাবলিক উইডো কনস্যুলার ও কল্যাণ শাখার মহাপরিচালক হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর মিজ সেহেলী বৃটেনের ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স থেকে টেকসই উন্নয়নের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েছেন। পড়াশোনা এবং চাকরি জীবনে তার অনেক অর্জন রয়েছে। -মানবজমিন