বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সোনা কেনার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২২ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ১ হাজার ১৩৬ টন সোনা মজুত করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪৫০ টন বেশি। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা মজুতের এই পরিমাণ গত ৫৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক লুইস স্ট্রিট রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে বলেন, বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নিরাপদ আশ্রয়ের সম্পদ হিসেবে বেশি পরিমাণ সোনা মজুতের ওপর জোর দিচ্ছে। এ কারণে সোনা কেনার পরিমাণও বেড়েছে। গত বছর ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ সোনা কিনেছে, তা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের অর্থনীতি মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যে রয়েছে। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনেও অনেক ওঠানামা হচ্ছে। শিগগিরই এই পরিস্থিতি বদলাবে বলেও কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এমন এক অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে সোনার কদর অনেক বেড়েছে।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনার পেছনে দুটি বিষয় কাজ করে। প্রথমত, সংকটের সময় এ ধরনের উদ্যোগ বেশ কার্যকর ও সাধারণ প্রবণতা। দ্বিতীয়ত, মূল্যবান এ ধাতুর দাম খুব বেশি কমে না। এ কারণে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার বিক্রি বেড়ে যায়।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস বলছে, অন্য অনেক ব্যাংকের সোনা মজুতের পরিমাণ বাড়লেও ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোনা সংগ্রহের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। গত বছর রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ৩৩ টন সোনা মজুত করেছে। যদিও এর আগের বছর তারা ৭৭ টন সোনা সংগ্রহ করেছিল। অর্থাৎ, ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা মজুতের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ৫৭ শতাংশ কমেছে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলেছে, ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ এরই মধ্যে প্রায় সাত হাজার কোটি মার্কিন ডলার কমে গেছে। এ কারণে তারা আর ডলার খরচ করে সোনা কিনতে চাচ্ছে না।
