মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলো টেকনাফে অপহৃত ৭ বাংলাদেশি

মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলো টেকনাফে অপহৃত ৭ বাংলাদেশি

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা থেকে অপহৃত ৭ বাংলাদেশি গহীন পাহাড় থেকে ফিরে এসেছে। পুলিশ বলছে, তাদের সাঁড়াশি অভিযানের ফলে দুর্বৃত্তরা অপহৃতদের ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণের মাধ্যমে অপহৃতদের ছেড়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে অপহৃতরা ফিরে আসে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে জাহাজপুরা নামক এলাকার পাহাড়ের কাছে গরু চড়াতে ও কাঠ সংগ্রহে গেলে অস্ত্রধারী একদল দুর্বৃত্ত তাদের ধরে গহীন পাহাড়ে যায়। ঘটনার পরপরই টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ, কক্সবাজার ডিবি ও স্থানীয় জনগণ পাহাড়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি আব্দুল হালিম জানান, বৃহস্পতিবারে বাহারছড়া থেকে অপহৃত ৭ ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের উদ্ধারে পাহাড়ে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকে। পরে শুক্রবার ভোর থেকে পুলিশের সদস্য আরো বৃদ্ধির মাধ্যমে সাঁড়াশি অভিযানে সন্ধ্যার দিকে গহীন পাহাড়ের ঝোঁপে ওই ৭ জনের সাড়া পাওয়া যায়।

তিনি আরো জানান, স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পাহাড়ের একটি সম্ভাব্য অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। শেষ পর্যন্ত অপহরণকারীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওই ৭ জনকে রেখে নিজেরাই পালিয়ে যায়। উদ্ধারকৃতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।

জাহাজপুরার স্থানীয় বাসিন্দা অপহৃত গিয়াস উদ্দীনের মা রহিমা জানান, ছেলের অপহরণের খবর পাওয়ার পর থেকে মনকে কোনোভাবে সান্ত্বনা দিতে পারছি না। শেষ পর্যন্ত ছেলের উদ্ধার হওয়ার খবরে সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

বাহারছড়ার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অপহৃতদের উদ্ধার করতে তারাও পুলিশের সাথে সার্বক্ষণিক সময় দিয়েছেন।

গত দুদিনে পাহাড়ের বেশির ভাগ অংশে পুলিশের সাথে অভিযানে ছিল স্থানীয় অনেকেই।

এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণের মাধ্যমে অপহৃতরা ফিরেছেন। তাদেরকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। ভাল করে হাঁটতেও পারছে না। ফিরে আসা ব্যক্তিরা হলেন, গিয়াস উদ্দিন (১৭), রশিদ আলম (২৬), জানে আলম, (৪৫),জাফর আলম (৪০),জাফরুল ইসলাম (৩০),ফজল করিম (৩০) ও আরিফ উল্লাহ (৩০) । এর মধ্যে গিয়াস উদ্দিন কলেজ ছাত্র ও ছৌকিদারের পুত্র।

উল্লেখ্য, গত ৬ মাসে টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক ৪১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৭ জন রোহিঙ্গা হলেও ২৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা। যেখানে ২২ জন মুক্তিপণের টাকা দিয়ে ফেরত আসার তথ্য জানিয়েছিল। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ ২ শিশু অপহরণের ৮ ঘন্টা পর ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসে। এ ছাড়া ২১ জানুয়ারি হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়ক পাহাড়ি ঢালার ভেতর থেকে মোহাম্মদ হোসেন নামে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।